Monday, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

সাঁথিয়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঘর নির্মাণকাজ শেষ না করেই পুরো টাকা উত্তোলন

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

মনসুর আলম খোকন: পাবনার সাঁথিয়ায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ঘর নির্মাণকাজ শেষ না করেই বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে।ফলে এসব ঘর পাওয়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন দু:চিন্তায় রয়েছেন।
জানা গেছে, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার দরিদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫ টি গৃহহীন পরিবারকে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ৫টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫ শ’ টাকা করে। মোট বরাদ্দ দেয়া অর্থের পরিমাণ ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫শ’ টাকা। এছাড়াও মালামাল পরিবহণের জন্য প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ দেয় হয় ৫ হাজার টাকা। এই ঘরসমূহ তৈরি করার দায়িত্ব ছিল সাঁথিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির উপর। যার সভাপতি ছিলেন নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ।
এসব ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন নাগডেমড়া গ্রামের রাইচরণ দাসের মেয়ে মায়া রাণী দাস, করমজা গ্রামের কালিপদ দাসের ছেলে গোবিন্দ চন্দ্র দাস,একই গ্রামের সুবাস চন্দ্র দাসের ছেলে সিপন চন্দ্র দাস,কাশিনাথপুর গ্রামের ভাদুচন্দ্র দাসের ছেলে অমরেশ চন্দ্র দাস ও কর্মচন্দ্র দাস। এরা ঋষি ও রাই সম্প্রদায়ের লোক।
সরেজমিনে বাড়িগুলোর কি অবস্থা তা দেখতে কয়েকজন সাংবাদিক গিয়েছিলেন নাগডেমড়া, কাশিনাথপুর এবং করমজা গ্রামে। নাগডেমড়া গ্রামের মায়া রাণী দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের দেওয়াল গাঁথা হয়েছে। তবে প্লাস্টার হয়নি। অসমাপ্ত রয়েছে বারান্দার পিলার তৈরি, উপরের টিনের ছাউনি হয়নি। দরজা, জানালা এবং মেঝের কাজ কিছুই হয়নি। মায়া রাণী বললেন, রাজমিস্ত্রি কাজ করে কিন্তু তার সঙ্গে কোন শ্রমিক থাকে না। শ্রমিকের কাজ করতে হয় মায়ারাণীর ছেলেকে। ইট-বালু, খোয়া-সিমেন্ট নৌকা ও মাথায় করে নির্মাণস্থলে আনতে হয় আমার ছেলেকে। এর জন্য কোন পারিশ্রমিক প্রদান করা হয় নাই। একই কথা বললেন কাশিনাথপুরের অমরেশ চন্দ্র দাস ও কর্ম চন্দ্র দাস। অমরেশ এবং কর্ম চন্দ্র শ্রমিকের কাজ করেন রাজমিস্ত্রীর সঙ্গে। এর বিনিময়ে তারা কোন পারিশ্রমিক পাননি। তারা আরও বললেন, কাজের জন্য তারা দুই ভাই মিলে একটি পানির পাম্প মেশিন কিনেছেন। এই পাম্প মেশিনের বিদ্যুৎ বিলও তাদের পরিশোধ করতে হচ্ছে। অমরেশ ও কর্ম চন্দ্রের ঘর দুটির কাজ অসমাপ্ত আছে। টিনের চালার ছাউনি লাগানো হয়েছে। বারান্দার কাজ, দরজা, জানালা মেঝের ঢালাই ও প্লাস্টারের কাজ হয়নি। করমজা গ্রামের গোবিন্দ ও সিপনের বাড়ির কাজ এখনও পুরোপুরি হয়নি। যেনতেন প্রকারে মেঝের ঢালাই করা হয়েছে। দরজা-জানালার সিআই সিট খুবই নি¤œমানের।
প্রকল্পটির কাজ করেন সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সদ্য বদলী হয়ে যাওয়া) এসএম জামাল আহমেদ। তিনি প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করেন গত ২৭ জুন। ইউএনও’র পক্ষে এই প্রকল্পের কাজ করেন বেড়া উপজেলার সানিলা গ্রামের এমএন আসিফ ওরফে বাবু। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি ৫টি ঘরনির্মাণের মোট টাকা পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, কাজ প্রায় শেষ। তিনি প্রতিটি ঘরের জন্য পেয়েছেন ২ লাখ ৫৯ হাজার পাঁচশ টাকা।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, জুন ফাইনালের জন্য তো অসমাপ্ত কাজের অব্যবহৃত টাকা উত্তোলন করে রাখতেই হয়েছে। তবে এই টাকা কোন তহবিলে গচ্ছিত আছে তার সদুত্তোর তিনি দেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে বদলী হয়ে যাওয়া টাকা উত্তোলনকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল অহমেদের কাছে জানতে বহুবার তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সাঁথিয়ার বর্তমান (সদ্য যোগদানকারী) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুদ হোসেন অসমাপ্ত ঘরসমূহের কাজ পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, আমি কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে (এমএন আসিফ) ২০ আগস্টের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার নির্দেশ প্রদান করেছি।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর