Tuesday, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

শতকোটি টাকার মালিক সিটি কলেজের ছাত্র!

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এখনও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডিই পেরুতে পারেননি। চলতি বছরেই বসবেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়। আর এরই মধ্যে বনে গেছেপ্রায় শতকোটি টাকার মালিক। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। রাজধানীর সিটি কলেজের ছাত্র রাতুল অনলাইন জুয়ার সাইট চালিয়েহাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। চলাফেরাতেও আভিজাত্যের ছোঁয়া। যখন যা মনে হয়েছে তাই করেছে, তাই কিনেছে।তার কাছে রয়েছে সিভিক প্রাইভেট কার, প্রিমিওর মত গাড়ি। আর বাইক রয়েছে কয়েক হালি। সেগুলো আর ফিফটিন তোঅবশ্যই। আর ফোন যখন যেটি মনে হয়েছে সেটিই কিনেছেন। আইফোন ১৪ এর সর্বশেষ মডেলও তার হাতে। বিলাসী জীবনবলতে যা বোঝায় তার সবটিই সে ভোগ করেছে। গ্রামের বাড়িতে বাবাকে কিনে দিয়েছেন ৪টি ভেকুও। 

রাতুল পাবনা জেলার আমিনপুর থানার বাঁশতলা গ্রামের আজিবুর রহমানের ছেলে।

অবৈধ পথে শতকোটি কামানো রাতুলসহ তিন জনকে গত মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।গ্রেফতারকৃত অন্য দুই জন হলেন মুন্না ইয়াসিন। তাদের বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মহানগরগোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মনিরুল ইসলাম তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনিবলেন, গ্রেফতারকৃত তিন জনের বাইরে রয়েছে আরো দুই জন। এরা হলো নবাব মুকুল। এদের আটক করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, পাবনা জেলার আমিনপুর থানার বাঁশতলা গ্রামের আজিবুর রহমানের ছেলে রাতুল। সে মেলবেট নামক একটি অনলাইন জুয়ার বাংলাদেশি মূল এজেন্ট। এছাড়াও আরো কয়েকটি জুয়ার সাইট পরিচালনাকরে। সে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাবা সামান্য মুহুরির কাজ করে। কিন্তু সে ৫০ লাখ টাকা দামের প্রাইভেট কারে চলাফেরা করে।তার তিনটি আর১৫ ভার্সন মোটরবাইক আছে। যার একেকটির মূল্য প্রায় লাখ টাকা। তার বড় ভাইকে তিনটি এক্সকাভেটর(মাটি কাটা মেশিন) কিনে দিয়েছে। সুবাস্তুতে কয়েক কোটি টাকার পার্টনারশিপে একটা বিদেশি পণ্যের শোরুমের কাজ করছে।থাকে ধানমন্ডির এক বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে। তার ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোনের একেকটির মূল্য প্রায় লাখ বা তারওবেশি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, রাতুল সম্প্রতি আজারবাইজানের একটা জুয়া কোম্পানির ২০০ কোটি টাকা মূল্যেরএজেন্সি ক্রয়ের আলোচনা করছে এবং পরীক্ষা শেষ করে আজারবাইজান যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এতকিছু তার জুয়ার সাইটপরিচালনা করে। রাতুল তার বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। তার বাবার কয়েকটি অ্যাকাউন্টে কয়েক কোটি টাকালেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাতুল তার সহযোগীদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চক্র গড়ে তোলে।অনলাইন গেইমের মাধ্যমে অন্তত কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডলার বিজনেসের মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচারওকরে।

রাতুলের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব কয়েক জন ভুক্তভোগী জানান, তার কথায় বিনিয়োগে দ্বিগুণ হওয়ার প্রলোভনে তিনি কয়েক বারে প্রায়আড়াই কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু পরবর্তী সময় তিনি আর কিছুই পাননি। যেহেতু তিনি কাজটি অন্যায় করেছেনসেহেতু তিনি বিষয়ে অভিযোগও করতে পারছেন না। নিয়ে তাদের পরিবারে অশান্তি চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন জুয়াড়ি বলেন, আজ থেকে বছর পাঁচেক আগেও এই অনলাইন বাজি ছিল এদেশের সমাজেরমুষ্টিমেয় ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখন সারা দেশের প্রতিটি শ্রেণিপেশার সাধারণ মানুষ অনলাইনে বাজিতে বুঁদ হয়ে থাকে।ফুটপাতের চাদোকানি থেকে শুরু করে সেলুন দোকানদার, হকার, বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী, বিক্রয় কর্মী থেকে শুরু করে ভবঘুরে, বাসট্রাকের চালকহেলপার, সিএনজিচালক, নির্মাণ শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা, রিকশাচালক দিনমজুর শ্রেণির মতো একেবারেনিম্ন আয়ের মানুষ এখন দিনের একটা সময় অনলাইনে বাজি ধরতেই ব্যস্ত থাকে। হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজারটাকা পর্যন্ত এই শ্রেণির মানুষ বাজি ধরে। কলেজবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তো রয়েছেই, স্কুলের নবমদশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাওঅনলাইনে বাজি ধরতে বেশ পটু।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইনে বেটিং ধরতে গিয়ে প্রথমে হাজার পরে হাজার টাকামোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ধরা হয়। এরপর আসক্তি বাড়লে ১০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত চলে যায়। আর এভাবেইটাকা শেষ হতে থাকে। জুয়ার এসব সাইটের অধিকাংশ পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, ফিলিপাইন, ম্যাকাও, ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, আজারবাইজান, বেলারুশ, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে। এসব সাইটে বাংলাদেশিদের ফাঁদে ফেলছেএদেশীয় এজেন্টরা।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর