Monday, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

শাহজাদপুরে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ খামারীরা

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

মোঃ আমিরুল ইসলাম,শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুলে শোভা পাচ্ছে মনোরম দৃশ্য।পুরো মাঠ ঢেকে আছে হলুদ বর্ণের চাঁদরে। সুন্দর ও অপরূপ দৃশ্যের আলোকে মধু চাষীরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সরিষার ক্ষেতে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের কাজে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এই মৌসুমে ফসলের জমির পাশে পোষা মৌমাছি দিয়ে শত শত বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন মৌ চাষীরা। ওই সব বাক্স থেকে পোষা মৌমাছিগুলো উড়ে গিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষার হলুদ ফুলে।

মৌ চাষীরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। তাতে একেকটি বাক্সে মোম দিয়ে তৈরি ছয় থেকে সাতটি মৌচাকের ফ্রেম থাকে। আর তার ভেতর রাখা হয় একটি রাণী মৌমাছি। রাণী মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে।মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। আর এই চাক থেকেই মধু সংগ্রহ করে থাকে চাষিরা। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত মৌ-চাষিরা এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকেন।

উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামে,বাড়াবিল উত্তরপাড়া,নরিনা ইউনিয়নের পাড়কোলা,জুগ্নীদহ উত্তরপাড়া,জুগ্নীদহ ঈদগাঁ মাঠে গিয়ে দেখা যায়,মধু আহরণে সবাই ব্যস্ত।কেউ বাক্স থেকে মধু বের করছেন,আবার কেউ বাক্স ঠিক করে দিচ্ছেন,কেউবা ড্রামে মধু ভরছেন।ক্রেতারা এসে মধু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা  কেজিতে বিক্রি করছেন।

সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জামালপুর থেকে আসা মধু ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বলেন,আমি তেইশ বছর হলো মধু আহরণ ব্যবসার সাথে জড়িত।প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা এখানে মধুর জন্য ১২০ মৌবাক্স স্থাপন করেছি।সাত থেকে দশ দিন পরপর মধু আহরণ করা হয়। মধু সংগ্রহের জন্য স্টিল ও কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বাক্স। যার উপরের অংশটা কালো রঙের পলিথিন ও চট দিয়ে মোড়ানো থাকে।

বাক্সের ভেতরে কাঠের তৈরি সাতটি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো বিশেষ কায়দায় লাগানো থাকে এক ধরনের সিট। পরবর্তীতে বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। তিনি আরও জানান, আমরা সরিষা ক্ষেত থেকে বছরে চার মাস মধু সংগ্রহ করে থাকি।

অন্য বছরের তুলনায় মধুর দাম এবার কম, গত বছর এক মন মধুর দাম ছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। আর এ বছর এক মন মধুর দাম হচ্ছে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা মত।তবে মৌ খামারীরা আশায় আছেন হয়তো মধুর দাম বাড়বে। যদি না বাড়ে তাহলে তারা লোকশানে পড়বেন বলে তিনি জানান।

শাহজাদপুর  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মাদ আব্দুস ছালাম জানান, এবার চলতি মৌসুমে শাহজাদপুর  উপজেলায় সরিষা চাষাবাদ  হয়েছে ১৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।এবার সরিষার আবাদকে ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মৌ খামারী বসেছেন ১১ জন এবং মৌ বাক্সের সংখ্যা ১ হাজার ২শত। সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি ফুলের উপর বসলে পরাগায়নে ফসল ভালো হয় এবং ১৮ থেকে ২০ ভাগ ফলন বেড়ে যায়।

এই উপজেলায় সরিষা ক্ষেত থেকে গত বছর মধু উৎপাদন হয়েছিল ১৯ মেট্রিক টন।আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন ও মধু আহরণের লক্ষমাত্রা  ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান। কৃষি অফিস থেকে মৌ খামারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর