সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়ার ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী রিনার (ছদ্মনাম) পরিবার এখন গ্রাম ছাড়া। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায়ও সে অংশ গ্রহণ করতে পারেনি। প্রায় সাতসাস (৭/৫/২২) আগে কিশোরী মেয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী রিনা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাবার সময় পথিমধ্যে জনৈক জনি হোসেনের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। ওই দিনই রিনার ভাই বাদি হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্ত জনি হোসেনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
প্রায় ৩মাস জেল হাজতে থাকার পর জনি হোসেন জামিনে মুক্ত হয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আব্দুর রউফের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি আইনের বিধি মেনে দায়িত্ব পালন করেছি। বাকিটা আদালতের এখতিয়ার। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পরথেকে গ্রামবাসির নানা অপবাদ ও কানাঘুষার কারণে রিনার পরিবার প্রায় একঘরে হয়ে পরে। রিনা আর বাড়ির বাহির হতে পারেনি। তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তাকে ৯ম শেণির বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসির নানা কুৎসার কারণে দিনমজুর মৎস্যজীবী বাবা বাধ্য হয়ে নিজ গ্রাম ছেড়ে একটি ছাপড়া ঘর ভাড়া নিয়ে মেয়ে স্ত্রীসহ পাবনা শহরে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি রিকসা চালান তার স্ত্রী একটি কারখানায় দিনমজুরের কাজ করছেন। সরেজমিন রিনাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বসবাসের জন্য তার বাবার মাত্র ২শতাংশ জমি রয়েছে। ওই বাড়ির একটি ঘরের মাঝখানে বেড়া দিয়ে একপাশে তার ভাই-ভাবী থাকে অন্যপাশে বাবামার সাথে রিনা থাকতো। বিলপাড়ে বাড়ি হওয়ায় তার পরিবার বিলের মাছ ধরে ও দিনমজুরি করে কোনমতে জীবীকা নির্বাহ করে। ওরা এলাকায় জিয়ানী নামে পরিচিত। রিনার ভাই জানান, রিনা এখন বাড়িতে থাকেনা। লোক লজ্জার ভয়ে বাবামাসহ তার বোনকে গ্রাম ত্যাগ করতে হয়েছে। ইচ্ছে আছে রিনাকে আবার ৯ম শেনিতে ভর্তি করার। তার দায়ের করা মামলাটি পাবনা আদালতে চলমান। রিনার ভাই চোখের পানি মুছতে মুছতে তার বোনের যে এতোবড় সর্বনাশ করেছে, পরিবারকে গ্রাম ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে সেই অভিযুক্ত জনি হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।