Monday, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

চতুর হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি, চাহিদা নেই বড় গরুর

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

আরিফ খাঁন: কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার গো-খামারিরা তাদের গরু বিক্রির জন্য আসেন উত্তরবঙ্গের বৃহৎ পশুর হাট “চতুর হাট” পশুর হাটে। এখানে আসা ঢাকা চট্রগ্রামের ব্যাপারীরা তাদের বড় গরুগুলো কিনে থাকেন। তবে করোনা মহামারির সময় থেকে গত দুই তিন বছর ধরে বড় গরুর ক্রেতা কমে যাওয়ায় ব্যাপারীদের অনেকেই আসছেন না হাটে। ফলে ক্রেতা স্বল্পতায় বড় গরু কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না খামারিরা। অন্যদিকে ছোট মাঝারি গরু চাহিদা বেশি থাকায় কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) হাটে গিয়ে দেখা যায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার হাজারও খামারি ট্রাকে ও নসিমনে গরু নিয়ে বেড়া চতুর হাটে এসেছেন। ছোট বড় সব বিক্রেতাকে হাঁটে আসতে দেখা যায়। কিন্ত ছোট ও মাঝারি ধরনের গরু বেশি বিক্রি হলেও বড় গরুগুলো কম বিক্রি হয়েছে বলে ক্রয় বিক্রয় সংশ্লিরা জানান।
বেড়া পৌর এলাকার শুম্ভুপুর মহল্লার গরুর খামারী ইব্রাহীম আলী বলেন, এবারে তিনি ১৫টি গরু চতুর হাঁটে এনেছেন বিক্রির জন্য যে গুলো প্রতিটি গড়ে ৭০ থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে।
দুপুর একটার মধ্যে ছয়টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সন্ধার মধ্যেই সব গরু বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদি। এছাড়াও দশ মণ থেকে ত্রিশ মণ ওজনের মধ্যে কয়েক’শ গরু উঠেছে এ হাঁটে।
সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পার করমজা গ্রামের খামারি আব্দুলাহ বলেন, বছর দশেক আগে তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় একটি খামার গড়ে তুলেছেন। প্রথম পাঁচ ছয় বছর তিনি গরু লালন-পালন ও ক্রয় বিক্রয় করে ভাল লাভ করেছেন।এখন বাড়তি দামে গো-খাদ্য কিনে গরু লালন পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। মঙ্গলবার বড় সাইজের ছয়টি গরু তিনি হাটে তুলেছিলেন, যার বাজার মূল্য মনে করেন তিন লক্ষ টাকা থেকে সাত লক্ষ টাকা। দেড় লাখ টাকা দামের দুইটা গরু বেচে অপেক্ষায় আছেন আড়াই তিন লাখ টাকা দামের চারটি গরু বিক্রি করবেন বলে। তিনি আরও বলেন আমার ১৫ মন ওজনের গরুটি আমি দাম চাচ্ছি সাড়ে চার লক্ষ টাকা কিন্তু ব্যাপারিরা বলে সাড়ে তিন লাখ। দাম শুনেই আমার মাথায় হাত। বর্তমান হাটে এ গরুগুলো ব্যাপারীরা যে দাম কচ্ছে তাতে কসাই দামও হচ্ছে না। তিনি লোকসান দিয়ে গরু বেচবেন না বলে শেষ পর্যন্ত হাঁটে অপেক্ষা করবেন।
হাঁটে গরু কিনতে আসা বেড়া মনজুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আযাদ বলেন, তার আয়ের সাথে সংগতি রেখে একটি তিনমন (মাংসের হিসেব) সাইজের একটি ষাড় কিনলেন ৭৮ হাজার টাকা দাম ধরে। বাজার ঘুরে দেখলেন এমন সাইজের গরু বিক্রেতারা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। হাঁটে এমন গরুর ক্রেতাদের গরু কিনতে হচ্ছে প্রতিযোগিতা করে। তিনি আরো জানালেন গরুটি যদি ছয় সাত মনের হতো তবে তুলনাম‚লক ভাবে কমম‚ল্যতে কিনতে পারতেন।
বেড়া পাইকরহাটি গ্রামের সফল গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত লোকমান আলী তিনি বলেন, এলাকার বড় বড় গরু কিনে তিনি ঢাকা নারায়ণগঞ্জে নিয়ে বিক্রি করেন। এবারও চতুর হাট থেকে ৩০-৪০ টি গরু কিনে ঢাকা কেরানীগঞ্জে কুরবানির হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে চতুর হাটে এসেছেন। গত তিন বছরই বড় গরু ঢাকায় নিয়ে ধরা খেয়েছি এবার কি হবে আল্লাহই জানে।
হাটে বড় গরু নিয়ে কয়েকজন কৃষক ও খামারীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বড় সাইজের গরু পালন করে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। হাটে বড় গরুর চাহিদা এমন হবে জানলে তারা গরুগুলো রোযার ঈদের মধ্যেই কসাই দরে বিক্রি করে দিতেন। তিনমাস অতিরিক্ত পালনে বাড়তি খরচই এখন তাদের কান্নার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
চতুর হাট কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও বেড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র রাইসুল ইসলাম তারেক বলেন, এ হাঁটে বড় গরুর তুলনায় ছোট এবং মাঝারি সাইজের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় গরুগুলো একটু দেরিতে বিক্রি হবে বলে আমরা আশাবাদি। হাটের ক্রেতা বিক্রেতাদের নিবাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখানে বেড়া পৌর পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিম কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তা ছাড়াও কোন পশু যদি অসুস্থ হয় সে ক্ষেত্রে এখানে পশু চিকিৎসকের পাশাপাশি মানুষের জন্য আমরা ডাক্তারও রেখেছি। কারন আজ প্রচন্ড রোদ মানুষ এবং গরু ছাগল অসুস্থ হতেই পারে। আজকের হাঁটে প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার গরু ৩ থেকে ৪ হাজার ছাগল ভেড়া এবং হাজার খানেকের মত মহিষ উঠেছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর