সংবাদ প্রকাশের পর নগরবাড়ির সেই নৌ-পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
আরিফ খান:পাবনার বেড়ায় নিষেধাজ্ঞার মাঝেই উৎকোচের বিনিময়ে জেলেদের ইলিশ মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়ার অপরাধে নগরবাড়ী ফাঁড়ির নৌ পুলিশের কনস্টেবল মোঃ লাইজুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রবিবার (২৩) অক্টোবর লাইজুকে প্রত্যাহার করে সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেয়া হয়েছে। নগরবাড়ী ফাঁড়ির নৌ পুলিশের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শরিফুল ইসলাম জানান, গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টেবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ,পরিবহন,মুজুদ বাজারজাতকরণ ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা করেছে সরকার। সারাদেশে নৌ পুলিশ সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নদীপথে অভিযান পরিচালনা করছে। কনস্টেবল লাইজু নিষেধাজ্ঞার মাঝেই মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়া এবং অভিযানের তথ্য আগাম জানিয়ে দেয়ার জন্য অসাধু জেলেদের সাথে চুক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাবনা নিউজ ডট নেটে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি উৎকোচ চাওয়ার একটি ভিডিও পাবনা নিউজ ডট নেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় রবিবার নৌ সদর দপ্তর কনস্টেবল লাইজুকে নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দেয়। একই সাথে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সদর দপ্তরে তলব করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইলিশ শিকার নিষিদ্ধকালে সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলেদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিকল্প কর্মসংস্থান ও সহায়তা করলেও বেড়া উপজেলার জেলেদের জন্য এ ধরনের কোনো বরাদ্দ দেয়নি। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে অনেক জেলেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরতে নদীতে নামছে।
জেলেদের অসহায়ত্বের সুযোগে একটি দালাল চক্র উপজেলার নগরবাড়ির নৌ-পুলিশের সাথে সমন্বয় করে জেলেদের নদীতে মাছ ধরার অনুমতি দেয়ার নামে ৪ থেকে ৫ হাজার করে টাকা চাঁদা আদায় করছে। আর নৌ পুলিশের পক্ষে এসব চাঁদাবাজি সমন্বয় করছিলেন কনস্টেবল লাইজু।
শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানে কনস্টেবল লাইজুর চাঁদাবাজির প্রমাণ মেলে। জেলেদের ইলিশ মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে নৌকাপ্রতি ৬ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন লাইজু। জেলেদের ছদ্মবেশে সে কথাপোকথনের ভিডিও গোপনে ধারণ করেন সংবাদকর্মী। রবিবার এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। রবিবার দুপুরে কনস্টেবল লাইজুকে প্রত্যাহার করা হয়।
তবে, এ ঘটনায় ইলিশ শিকার বিরোধী অভিযানে কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. সবুর আলী । তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের শুরু থেকেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নৌ পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় থানা পুলিশও সক্রিয় রয়েছে। প্রশাসন কিংবা আইনশৃংখলা বাহিনীর কেউ অনিয়মে যুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।