ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। শতকরা ৪০ ভাগ মানুষের নাক ডাকার সমস্যাটি আছে।সাধারণত সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটলে নাক ডাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন না কেউ। যদিও এটা মারাত্মক কোন শারীরিক সমস্যার জন্য ও হতে পারে, যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। ঘুমের সময় নাকের মাংসপেশি যদি খুব বেশি শিথিল হয় তাহলে নাক ডাকা শুরু হয়। যখন নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস চলাচল করে তখন এই শিথিল মাংসপেশিতে স্পন্দন হয়ে শব্দ উৎপন্ন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই নাক ডাকা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোরে হয় তখন এটাকে অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (OSA) বলা হয়। OSA হলে যিনি নাক ডাকেন তার শ্বাস কয়েক সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে। যার ফলে রক্তের অক্সিজেন এর মাত্রা কমে যায়। এর কারণে মাথাব্যাথা ও ক্লান্তি বোধ হতে পারে। আজ আসুন নাক ডাকার কারণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেই।
কারণ সমূহ:
১।ঘুমের ঔষধ, ঠাণ্ডার ঔষধ ও অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ঔষধ খেলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
২।ওজন বেশি হলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।যাদের ঘাড় ছোট ও মোটা তাঁরা নাক ডাকার সমস্যায় বেশি ভোগেন।
৩।রাতের খাবার বেশি খেলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
৪।অ্যালকোহল সেবন করলে নাক ডাকতে পারে।
৫।বাচ্চাদের নাক ডাকার সমস্যাটি হয় মূলত টনসিল ফুলে গেলে।
৬।বড় ও নরম বালিশে ঘুমালে
৭।চিত হয়ে ঘুমালে এবং
৮।নাক বন্ধ থাকলে
৯।অ্যালার্জি ও ধূমপানের কারণেও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
১০। নাকের ভেতরের পর্দার স্থান চ্যুতির কারণে বা আলজিহবা যদি বড় হয় তাহলেও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
প্রতিকারের উপায় সমুহ –
- সেডেটিভস ও অ্যান্টি হিস্টামিন ঔষধ এড়িয়ে চলুন।
- ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।
- রাতের খাবার কম খান, পেট ভরে খাবেন না।
- অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে নিরাময়ের উদ্যোগ নিন। বেড রুম পরিষ্কার ও ধুলাবালি মুক্ত রাখুন।
- এক পাশে কাত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
- বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নাক ডাকার সমস্যা হলে টনসিলের টেস্ট করিয়ে নিন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- পাতলা ও শক্ত বালিশ ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে বালিশ ছাড়া ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
- নাক ডাকার সময় পাশ পরিবর্তন করলে নাক ডাকা বন্ধ হয়।
- ধুমপান বন্ধ করুন।
- নাকে বা গলায় কোন সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য ডাক্তারের সাহায্য নিন
যাদের নাক ডাকার সমস্যাটি আছে তাঁরা কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করুন ও প্রতিকারের ব্যবস্থা নিন।