Friday, ডিসেম্বর ৮, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধারবেড়ায় বালুবাহী ড্রাম ট্রাক চাপায় ঠিকাদার নিহতমহাসড়কের দুপাশের গাছ চালক-যাত্রীদের আতঙ্ক

বেড়ায় নদী ভাঙন জমি, ঘরবাড়ি ও জাতীয় বিদ্যুৎ লাইন রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

আরিফ খান ঃ নদী ভাঙনে ফসলি জমি ঘরবাড়ি ও ৩৩০০০ কেভি জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনসহ (সাব মেরিন ক্যাবল) রক্ষার দাবি নিয়ে পাবনার বেড়া উপজেলার ও মানিকগঞ্জের জেলার দৌলতপুর উপজেলার যমুনার চরের ভাঙন কবলিত হাজারও মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
শুক্রবার দুপুরে বেড়া উপজেলার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের চর কল্যানপুর নামক চরে ভাঙনকৃত যমুনা নদীর পাড়ে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে হাজারও মানুষ।
চরাঞ্চলের মানুষ ও কাশিনাথপুর পল্লী বিদুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নগরবাড়ি নৌবন্দর এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার যমুনা নদীর মাটির নিচ দিয়ে ৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩৩০০০ কেভি জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন দিয়ে চরাচঞ্চরের মানুষের বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা হয়। ২০২১ সালে এতে বেড়া ও মানিকগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে বারো হাজার পরিবার বিদুৎ সংযোগ পায়। চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবীর পর বিদুৎ পেয়ে উৎসবে আমেজে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সে সময় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরন করেন তারা। এখন আবার নদী ভাঙ্গনের কারনে হারাতে বসেছে তাদের কাঙ্খিত বিদ্যুৎ। নদী ভাঙ্গনের ফলে সাব মেরিন কেবলের তার মাটির নিচ থেকে বেড় হয়ে গেছে। এতে যেকোন মূহুতে বড় ধরনের দূঘটনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পল্লি বিদুৎ অফিস থেকে একাধিকবার বেড়া পানি উন্নযন বোর্ডকে (পাউবো) অবগত কররেও এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন রক্ষায় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে তাদের অভিযোগ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার চর কল্যাণপুর থেকে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় একমাস আগে থেকে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় শুরু হয়েছে এ ভাঙন। গত তিন বছরে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি। গত এক মাসে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ও কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি যমুনা নদীতে বিলিন হয়েছে। ভাঙনে ঝুকিপূর্ন হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন যেটি ভাঙন থেকে মাত্র একশ গজ দুরে। সাব স্টেশন কে ঝুকিপুর্ণ ঘোষণাা করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন।
এ সময় মানববন্ধনে বেড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেসবাউল হক বলেন, ৬৮, পাবনা-১ আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. সামছুল হক টুকু এমপি এবং পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির এমপি ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়ে (ডিও লেটার) চিঠি দিলেও তারা রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। ভাঙন রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে কিছুদিনের মধ্যে ভাঙনে চরের বেশকিছু গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদের, মানিকগঞ্জ দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ আহমেদ, পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম, সমাজ সেবক আব্দুল আওয়াল, সুরমান আলী, প্রমুখ। বক্তারা অভিযোগে যমুনার আগ্রাসী ভাঙ্গনের মুখে একে একে ফসলী জমি, ঘর বাড়ি বিলীন হয়ে জাতীয় গ্রীডের ৩৩০০০ হাজার কেভি সাব মেরিন সঞ্চালন লাইন আক্রান্ত হতে চলেছে অথচ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। এ নিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। মানববন্ধন থেকে দ্রুত ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা।
পাবনা পল্লিবিদুৎ সমিতি ২ এর জেনারেল ম্যানেজার মজিবুল হক এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙ্গনরোদে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঁচবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের মাসিক সভাতেও আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও পাবনা-১ ও পাবনা-২ আসনের সম্মানিত সংসদ সদস্যরা ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন । কিন্তু কি কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনরকম ব্যবস্থা করছেন না এটা আমাদের বোধগম্য নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কল্যাণপুর খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে না পারলে ওখানকার পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, ভাঙন ঠেকাতে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ ও মাননীয় দুই এমপি মহোদয়ের ডিওলেটার পাওয়ার পরই আমরা আমাদের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবগত করেছি। আমাদের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের অনুমতি না পেলে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারবো না। অনুমতি পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করবো।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর