আরিফ খান: মৌলবাদের উত্থান ও আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় আবহমান বাঙালি সংস্কৃতি চর্চায় ছেদ পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
মঙ্গলবার ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে সাঁথিয়া থিয়েটারের আয়োজনে লোকনাট্য উৎসবে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাউল গান, পথ ও মঞ্চ নাটক, যাত্রাপালা বাঙালি সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। এক সময় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসবের চর্চা হতো, উৎসব আয়োজন হতো। মৌলবাদী তৎপরতায় এখন তা অনেক কমে গেছে। সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে সে উৎসবগুলোকে আবারও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
নাট্যচর্চার প্রসারে গ্রাম থিয়েটারের প্রশংসা করে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, গ্রাম থিয়েটার নাটকের মাধ্যমে গ্রামের সামাজিক বাস্তবতা তুলে ধরে। সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় গ্রাম পর্যায়ে নাট্যচর্চার পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। সারাদেশের সকল উপজেলায় সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের আগে আগামী অর্থবছর থেকেই শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
সাঁথিয়া থিয়েটারের সভাপতি আব্দুদ দাইন সরকারের সভাপতিত্বে তিনদিন ব্যাপী লোকনাট্য উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি।
ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, বাঙালী সংস্কৃতির চেতনা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। পাকিস্তানী ভাবধারার অনুসারী বিএনপি জামাত সব সময় বাঙালি সংস্কৃতির চর্চাকে বাধা দিয়েছে। সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমেই তাদের অশুভ তৎপরতার জবাব দিতে হবে।
গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশের নাটকের একটি স্বকীয়, স্বতন্ত্র ধারা রয়েছে। উপনিবেশিক সংস্কৃতির প্রভাব আমাদের নাটকে আছে এটি সঠিক নয়। আমাদের উচিৎ নিজস্ব ঐতিহ্যের সাথে, শেকড়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে সংস্কৃতিকে আধুনিক করে তোলা। গ্রাম থিয়েটার সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, সাঁথিয়া থিয়েটার ৪০ বছর ধরে গ্রাম পর্যায়ে নাট্য চর্চায় কাজ করে চলেছে। মৌলবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তারা সাহসিকতা নিয়ে সংগঠন ধরে রেখেছে। নাট্য উৎসব আয়োজন করায় সাঁথিয়া থিয়েটারের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।
সাঁথিয়া থিয়েটারের আয়োজনে নাট্য উৎসবে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলার নাট্যকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। তিনদিন ব্যাপী এ নাট্য উৎসব শেষ হবে মঙ্গলবার।