রেজাউল করিম শেখ
‘নদীতে জল ডুবে গেলে
জং ধরা সূর্যরা আর আলো দেয় না সবুজ গ্রহে’। গ্রহান্তরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ জমাট বেঁধে গড়ে ওঠে বেদনার পাহাড়। চূড়া বসে কবি দেখেন- ‘দিন চলে যায় রাত চলে যায়/ মানুষ মরে যায় পচে যায়/ বদলে যায় সৌরজগত। বিক্ষোভের আগুনে জ্বলে ওঠে কবির অজস্র চোখ- ব্যথায় জর্জর কবির বোধ বলে ওঠে- মরিচাবদ্ধ তালার মতো বন্ধ হবে সূর্যালোমুখ/ নক্ষত্র বদলে যাবে সূর্য মরে যাবে। নিঃসীম অন্ধকারে তলিয়ে যায় কবির জগত, তার স্বজনদের শৃঙ্খলিত জীবনের আস্বাদে। গেয়ে ওঠেন আগুনে ঝাঁপ দেওয়া পাখির স্বজনের মতো বিউগল সুরে- মানুষ মরে গেছে কৃষক মরে গেছে/ কৃষ্ণ আলোতে ঢাকা অমাবস্যায়/ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা নৈশ্য ভোজে বেছে নিয়ে সূর্যরশ্মি/বহমান নদী আছে নদীতে ডুবে গেছে জল’। কবি এখানেই থেমে যান না, হেরে যান না দপদপ করে জ্বলতে থাকা আগুনে, উচ্চারিত হয় ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরিসমাপ্তিতে অনিকেত প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা- ‘শীতল জলের রাষ্পরা জ্বলে উঠবে কোন কাল?’
এই শহরের মৃত মানুষের মতো কবি লাশের পাশে লাশ শুয়ে পড়েন। দেখেন নির্বাণের চোখে- কেউ জীবন্ত কেউ ঘুমন্ত কেউ মাতাল- লাশ। দ্বিধা-সংশয়ের নির্মম দেয়ালে পাষণ্ডের মতো কড়াঘাত করে বলে ওঠেন- উনুনের আগুনে সূর্যরা পুড়ে গেছে/ কচুর পানার মতো জন্মেছে লাশ… এই মৃতদের বাংলায় কবি শুয়ে থাকেন, মানে মড়ার মতো পড়ে থাকেন আপাত দৃষ্টিতে রক্তে মাংশে থলথলে দেহের মৃতদের ভিড়ে।
কবি সালেক শিবলু। ১ জুন ১৯৯১ সালে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাঁশি, মঞ্চ আর কবিতার সোনালী দেহ তাঁর আপন ভুবন। কবির আজ জন্মদিন। এই এতোক্ষণ তাঁর কবিতায় হেঁটে বেড়ালাম। ‘শীতল জলের বাষ্প’- তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ।
জন্মদিনে কবির প্রতি শুভেচ্ছা!
জয় হোক কবি ও কবিতার
জয় হোক কবিতা অন্তঃপ্রাণ মানুষের।