Monday, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পাবনার কৃষকেরা

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

নাছির হোসাইনঃ পাবনায় চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম পেয়েও খুশি কৃষক। তবে পানির অভাবে পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। জেলার ৯টি উপজেলায় একই চিত্র। কোন কোন উপজেলায় নদী পাড়ের কৃষকেরা নদীতে পাট জাগ দিলেও যাদের খাল বিলের পানিই একমাত্র ভরাসা তারা পাট জাগ দিতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই আগাম পাট জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো শুরু হয়ে গেছে। নতুন পাট হাটে বাজারে উঠেছে। তবে বেশীর ভাগ কৃষকই এখন পর্যন্ত পাট জাগ দিতে দুর দুরান্ত থেকে বিভিন্ন প্রকার পরিবহনে করে নদীতে পাট জাগ দিচ্ছে। এতে খরচ বেশী হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন না কৃষক। যদিও এ বছর পাটের দাম ভাল । তা ছাড়া পানি কম থাকায় পানি পচে যাওয়ায় পাট কালো হয়ে যাচ্ছে। এতে দাম ও কম পাওয়া যাচ্ছে।


এ দিকে আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস শেষ হতে চললেও উপজেলায় কাঙ্খিত বৃষ্টিপাতের দেখা নেই। আর সে কারণে উপজেলার অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে তেমন কোন পানি নেই। যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পাট চাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে কেউবা জমির পাশে, কেউবা রাস্তার পাশে, আবার কেউবা খাল, বিল বা ডোবার পাশে স্তুপ করে রেখে দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার খাল, বিল বা জলাশয়ের অল্প পানিতেই পাট পচানোর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ পরিবহনে করে দুর দরান্ত থেকে পাট বহন করে নিয়ে এসে ইছামতি নদীতে জাগ দিচ্ছে।

পাবনা সদর, সাঁথিয়া সুজানগর, ঈশ্বরদী, চাটমোহর, ভাংগুড়া ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে পাট চাষিদের এমন দুর্দশা দেখা গেছে। অনাবৃষ্টির কারণে জমির কাছাকাছি জলায়শয়ের পানিও শুকিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রচ- তাপে কোথাও কোথাও পাটগাছ পুড়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। রাস্তার পাশে পাট রেখে দিলেও পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৯ উপজেলার ৪০ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাটের এই দর গত বছরের তুলনায় বেশি। গত বছর একই সময়ে ভালোমানের পাট মণ প্রতি ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
পাবনার সদর উপজেলার কামারডাঙ্গা গ্রামের কৃষক তোফাজ্জল বলেন, গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় এবার বেশি করে পাট রোপণ করেছি। গত বছর ৭ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করলেও এবার ১১ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারব না বলে জমিতেই রয়েছে। অনেক জমির পাট মরে যাচ্ছে। ভরা মৌসুমে পানির দেখা নেই। বৃষ্টিও হচ্ছে না। পাট নিয়ে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে আছি। এ জন্য বাজারে দাম বেশী পেলেও লাভের মুখ দেখছি না।

সুজানগরের পাট কেটে পালা করে রাখা আবু সাঈদ বলেন, ১০ কিলোমিটার দুরে দুর্গাপুর থেকে ইঞ্জিনচালিত গাড়িতে ৩০০ টাকা প্রতি গাড়ি হিসেবে পদ্মাপাড়ে নিয়ে আসছেন। জাগ দিতে পুকুর মালিককে ১ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে।
সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক আ’লীগ নেতা আব্দুর কাদের জানান, তিনি এ বছর ৫বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পাট পচানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। কিন্তু আশপাশের খাল, বিল, ডোবা ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পচাতে পারছি না। এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্যানালে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, পাট জাগ দিতে যাতে কৃষকদের সমস্যা হওয়ায় ইতোমধ্যে সেচ প্রকল্পের ক্যানেলগুলোতে পানি সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্লুইস গেট খুলে বিলে পানি ঢোকানোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের কষ্ট দূর হবে। আগামী বছর কৃষকরা যেন বিড়ম্বনার শিকার না হোন সেটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর