নিজস্ব প্রতিনিধি : গত ৩ সপ্তাহে পদ্মা-যমুনার ভাঙনের মুখে পাবনার বেড়া ও সুজানগর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি ও পাকা সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সাথে বেড়া উপজেলার নটাখোলা জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
সরেজমিনে নটাখোলা খানপুরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২০০ মিটার পাকা সড়ক যমুনার পানির তোড়ে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে খানপুরা মধ্যপাড়া কবরস্থানের অর্ধেকেরও বেশি অংশ।
খানপুরা গ্রামের আব্দুল আলীম মাস্টার বলেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে খানপুরা-দয়রামপুর সড়কের ২০০ মিটার যমুনার গ্রাসে চলে যায়।
ক্রমাগত ভাঙনে খানপুরা গ্রামে জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। এই টাওয়ার যমুনা নদীর ভেতর দিয়ে আসা ১১টি সঞ্চালন টাওয়ারকে নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে আগ্রাসী যমুনা থেকে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে। টাওয়ারটি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে।
বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছর যমুনার ভাঙনে নটাখোলা ফেরিঘাটসহ গ্রামটির বেশিরভাগ অংশই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবছর যমুনার ভাঙন আরো প্রশস্ত হয়ে খানপুরা, চরপেঁচাকোলা, ঘোপ সিলেন্দা ও মোহনগঞ্জ গ্রামের বসতভিটা ও রাস্তাঘাট বিলীন হয়েছে। গ্রামগুলোতে নদীতে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিকে কেবল যমুনাতেই নয়, সুজানগর উপজেলার পদ্মা পাড়ের গ্রামগুলোতেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে সুজানগর উপজেলার গুপিনপুর, বরখাপুর, রায়পুর, শ্যামনগর, নারুহাটি, সাতবাড়িয়া, খলিলপুর, কাঞ্চন বাঁধ ও হাসামপুর গ্রামে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িঘর, ফসলি জমি প্রমত্তা পদ্মার গ্রাসে চলে গেছে।
বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে পদ্মা-যমুনায় একই সঙ্গে পানি বেড়েছে। এই পানি নদীর দুই তীরে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করছে।