বিশেষ প্রতিনিধি, পাবনা : করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের এমএসআর (মেডিকেল ও সার্জিক্যাল রিইকুইজিট) সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র গ্রহণ করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভাঙ্গুড়া থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৃথক দৃশ্যমান বাক্সে এসব দরপত্র গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে ঠিকাদার ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বিধিমোতাবেক দরপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১২ মার্চ ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য এমএসআর সামগ্রী (ওষুধপত্র, লিলেন, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, গজ-ব্যান্ডেজ-কটন, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট এবং আসবাবপত্র) সরবরাহের জন্য ছয়টি গ্রুপে ঠিকাদারদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র বিক্রি চলে ২৬ মার্চ দুপুর পর্যন্ত। আর দরপত্র দাখিলের তারিখ ছিল গতকাল। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। গণজমায়েত নিষিদ্ধ এবং সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যেই ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী গতকাল দরপত্র গ্রহণ করে।
এতে ক্ষোভ জানিয়ে পাবনা ও আশপাশের কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ইউএনওর পছন্দের লোককে কাজ দিতেই এ আয়োজন। এ দরপত্র বাতিল করে উপযুক্ত সময়ে পুনঃদরপত্র আহ্বানের অনুরোধ করেন তারা।
গতকাল ইউএনও কার্যালয় ও ভাঙ্গুড়া থানায় স্বাস্থ্য দপ্তরের দরপত্রের বাক্স থাকলেও ছিল না লোকজন। দুপুরের দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোসা. হালিমা খানম জানান, ছয়টি গ্রুপের মধ্যে ক গ্রুপে দুটি, খ গ্রুপে তিনটি, গ গ্রুপে চারটি, ঘ গ্রুপে তিনটি, ঙ গ্রুপে তিনটি ও চ গ্রুপে দুটি দরপত্র জমা পড়েছে। তিনি জানান, সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই দরপত্র আহ্বান করেছি।
এ বিষয়ে ইউএনও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, কারোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং এমএসআর দরপত্র কমিটির আহ্বায়কে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মির্জা মেহেদী ইকবাল বলেন, এ ব্যাপারে তার কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এসব কাজ স্বাধীনভাবে করে থাকে। তবে করোনাভাইরাসের সময় এ ধরনের দরপত্র মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে।