ফজলুর রহমান, নিজস্ব প্রতিনিধি (কাশিনাথপুর) : হাট-বাজারের জনসমাগম এড়াতে কাশিনাথপুরে গ্রামের ভেতরেই সবজি দোকান চালু করেছেন এক মুদি ব্যবসায়ী। কাশিনাথপুর বাবুপাড়ায় মুদির দোকানী আব্দুল মজিদ তার মুদির দোকানেই কাঁচা-তরকারি বিক্রি শুরু করেছেন। হাট-বাজারে ভীড় এড়াতে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা ছোট ছোট মুদির দোকানীদের তাদের দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় তরী-তরকারি বিক্রির আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার (১২ এপ্রিল) থেকে দোকানি আব্দুল মজিদ তার দোকানে তরী-তরকারি বিক্রি শুরু করেছেন।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ আপদকালীন অবস্থায় গ্রামবাসীর জন্য বাজারের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে সবজি বিক্রি করছি, যেন গ্রামবাসী বাজারের দিকে না যায়।
আবুল হাসেম নামের এক ক্রেতা জানান, আমি ২টি লাউকুমড়াতে বাজারের তুলনায় ১০ টাকা কমেই পেয়েছি এখানে।
স্থানীয় গ্রামপ্রধান করিম সেখ জানান, বাজারের সবজি বিক্রেতারা আপাতত বাজারে না গিয়ে যার যার এলাকায় ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়েও যদি ব্যবসা করেন, তবু তাদের বিক্রি কম হবে না। এতে করে করোনার ঝুঁকি কমবে।
কাশিনাথপুর নাগরিক কমিটির সেক্রেটারী ডা. আমিরুল ইসলাম সানু বলেন, কাশিনাথপুর বাজারের জনসমাগম কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না। প্রশাসন মাঠে নেমেও তেমন কোন প্রতিকার করতে পারছে না। এমতাবস্তায় বাজার এলাকা থেকে ব্যবসায়ীদের গ্রামে গ্রামে ভ্রাম্যমান বিক্রয়কেন্দ্র পরিচালনার পরামর্শ দিচ্ছি।

গতকাল কাশিনাথপুর হাটের হাজার হাজার লোকের সমাগম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত তেমন কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কাশিনাথপুরের এই ভয়াবহ চিত্রকে গুরুত্বের সাথে দেখছেন না বলে ফেসবুক ব্যবহারকারি সুজন আসাদুজ্জামান মন্তব্য করেন।
কাশিনাথপুর হাটের এক ইজারাদার বলেন, পেঁয়াজ হাটের কারণে কাশিনাথপুর হাটে এতটা সমাগম হচ্ছে। সপ্তাহে দুই দিন রোববার-বৃহস্পতিবারে কাশিনাথপুরে পেঁয়াজের হাট বসে। এ সময় কৃষকরা পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পারলে তারা আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হবে। তাই পদ্ধতিগত কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে জনসমাগম কমিয়ে আনা সম্ভব। তিনি বলেন, সপ্তাহের দুইদিনের পরিবর্তে এই মুহূর্তে প্রতিদিন যদি কৃষকদের পেঁয়াজ বিক্রির জন্য আড়তদাররা দুই ঘণ্টা করে তাদের আড়ত খোলা রাখে, তবে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ প্রতিদিনই বাজারে নিয়ে এসে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতে পারবে। আর ক্রেতারাও আড়তদারদের কাছ থেকে প্রয়োজন মাফিক পেঁয়াজ কিনে নিতে পারবে। আর এই উদ্যোগটি অবশ্যই প্রশাসনের সহায়তায় করা সম্ভব।
কাশিনাথপুরের হাট-বাজারের এই জনসমাগমের চিত্র পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে যেমন ভাবতে হবে, তেমনি ভাবতে হবে এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরও- এরকমই ভাবছেন কাশিনাথপুরের সচেতন জনগন।