জাহিদুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনায় ঘরবন্দি অসহায়দের জন্য সরকারি ত্রাণের ২২৯ বস্তা চালসহ পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানাধীন আলোচিত ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার (৬০) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত কোরবান আলী সরদার ঢালারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার আমিনুল কবীর তরফদার জানান, ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরকারি ত্রাণের চাল দুস্থদের মাঝে বিতরণ না করে অসৎ উদ্দেশ্যে বাঁধেরহাট এলাকায় নিজস্ব গোডাউনে মজুত করেছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযানে যায় র্যাব সদস্যরা। অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে হাত নাতে ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলীকে আটক ও গোডাউন থেকে ২২৯ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়।
বাঁধেরহাট এলাকার কয়েকজন জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সারাদেশের ন্যায় পাবনায়ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়। ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলে কোরবান চেয়ারম্যান চরাঞ্চল অধ্যূষিত ঢালারচর ইউনিয়ন পরিষদে না নিয়ে নিজ গুদাম ঘরে নিয়ে বস্তা পরিবর্তন করে কালোবাজারে বিক্রি করছিল।
রাতে বেড়া উপজেলার শতাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার গ্রেফতারের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করতে থাকেন। এদিকে গ্রেফতারকৃত কোরবান আলী সরদারের লোকজন বলছেন, তিনি কখনও চাল চুরি করতে পারেন না। আল্লাহ তার ধনসম্পত্তি কম দেননি। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে দাবী করেছেন চেয়ারম্যানের নিকটজনেরা। রাতেই বেশ কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী তার পক্ষে বিভিন্ন লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈন উদ্দিন রাত ১১টায় জানান, চেয়ারম্যান বাঁধেরহাটে বসেই পরিষদের সব কাজ পরিচালনা করতেন বলে আমরা জানতাম। র্যাব তাঁকে চালসহ আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। র্যাবের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আমাদের থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আমিনপুর থানায় আনার পর রাত ১১ টার দিকে কোরবান আলীর সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, বাঁধেরহাটে আমার ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় অবস্থিত। এই কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত গুদামে ভিজিডির চাল নামানো হয়েছিল। ইউএনও সাহেবের অনুমতি সাপেক্ষে এই চাল বিতরণ করার কথা ছিল।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি চাল কোনোভাবেই ব্যক্তিগত গুদামে রাখার সুযোগ নেই। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।