গোলাম মাহবুব : কথায় বলে অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা।করোনা ভাইরাস (Covid-19) এর প্রভাবে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো বিশ্ব। থেমে গেছে বিশ্বের সকল কাজ-কর্ম। বাংলাদেশের খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ এখন পুরোপুরিভাবেই কর্মহীন। ফলে বেড়ে যাচ্ছে অপরাধ প্রবণতা। গ্রামে-গঞ্জে দেখা যায় রাস্তা লকডাউন করে গ্রামের মধ্যে জুয়া, তাসের আসর জমাচ্ছে অনেকেই।
আবার সকলের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকট দেখা দিচ্ছে পরিবারে। অভাবে হয় স্বভাব নষ্ট। ফলে বেড়ে যাচ্ছে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির মত ঘটনা। দেশের কোথাও কোথাও পিপিই পড়ে সরকারি লোকের পরিচয় দিয়ে বাসায় ডুকে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সন্ধার পর থেকেই রাস্তা-ঘাট হয়ে যায় জনশূন্য। কেউ ঘর থেকে বের হয় না। ফলে এ সময় চোরাকারবারি, সন্ত্রাসীদের জন্য পুরো দেশটাই হয়ে যায় অভয়ারণ্য। তারা ইচ্ছমত করতে পারে তাদের অপকর্ম।
কাজকর্মহীন অবস্থায় ঘরে বসে থাকার কারণে মানুষের মধ্যে ধর্য্য ও সহ্য ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে মানুষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হচ্ছে বেশি। সামান্য বিষয় বা কথা নিয়ে মারামারি এমনকি মানুষকে হত্যা পর্যন্ত করতে দ্বিধাবোধ করছে না মানুষ। গত পনের দিনে শুধুমাত্র পাবনাতেই চার জন খুন হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনা প্রায় ডজন খানেকের বেশি। পারিবারিক ঝামেলায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এছাড়া গত ১৫দিনের বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় প্রায় ১৫টি চুরির খবর পাওয়া গেছে। দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে।
সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, করোনার মত ভয়াবহ দুর্যোগ, মহামারি আকার ধারণ করলেও এক শ্রেণির মানুষের এখনও বিবেক জাগ্রত হয়নি। এ সকল বিবেকহীন মানুষের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করার জন্য সমাজের সচেতন মানুষকে আরো সজাগ থাকতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ যাতে অপরাধিরা নিতে না পারে, সেদিকে তাদের নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। রাস্তা-ঘাট গ্রাম-গঞ্জে রাতের বেলা টহল আরো জোরদার করতে হবে। সর্বোপরি সবাই একত্রিত হয়ে করোনার পাশাপাশি এ সকল অপরাধকে মোকাবেলা করতে হবে। সহযোগিতা করতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে।