বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু পাবনার বেড়া উপজেলার সোনালী ব্যাংকের বেড়া শাখায় সামজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা প্রচণ্ড ভিড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হতে হচ্ছে ব্যাংকে আসা লোকজনকে। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা ও প্রতিবন্ধীভাতা তুলতে ব্যাংকে ভিড় করছেন ভাতাভোগীরা। এ জন্যই হঠাৎ করে ব্যাংকে ভিড় ব্যাপক বেড়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২২ ও ২৩ এপ্রিল) পাঁচ শতাধিক অসহায় ও দুস্থ মানুষ ভাতা তুলতে ব্যাংকে আসেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী একে একে তাঁদেরকে ভিতরে ঢোকানোয় ব্যাংকের সামনে সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড ভিড়।
বেড়া পৌর শহরের একটি মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সোনালী ব্যাংকের বেড়া শাখা অবস্থিত। তিনমাস পর পর এই শাখা থেকে এক হাজার ৯৬৬ জনকে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা ও প্রতিবন্ধীভাতা দেওয়া হয়। তিনমাস পর ব্যাংকে ভাতার টাকা আসার খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন ভাতাভোগীরা। সরেজমিনে ব্যাংকে গেলে দেখা যায়, নিচ তলার মার্কেট ও এর সামনের রাস্তায় গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছে নারী-পুরুষ। ব্যাংকের মধ্যে দাঁড়ানোর জায়গা না থাকায় তাঁরা সিঁড়ি ও রাস্তায় লাইনে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছেন না।
তাদের সঙ্গে কথা বলে কারো মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়নি করোনাভীতি। হাটুরিয়া-নাকলিয়া ইউনিয়নের পেঁচাকোলা গ্রাম থেকে বয়স্কভাতা তুলতে আসা মিনার উদ্দিন সরদার (৭৫) বলেন, ‘তিনমাস ধইর্যা এই টাকা কয়ডার জন্যে অপেক্ষা করতেছি। এই টাকা কয়ডা পালি জানডা একটু বাঁচে। কিন্তু যে ভিড়, তাতে কখন টাকা পাবো বুঝতেছি না।’
ভিড়ের মধ্যে দাঁড়ানো একই ইউনিয়নের জগন্নাথপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, ‘ভিড় দেইখ্যা ভয় পালি কি চলে? তিনমাস পর পর পনের শ টাকা পাই। আমাগরে কাছে অসুখ-বিসুখের চাইতে এই টাকা কয়ডাই এখন বড়।’
সোনালী ব্যাংক বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক মোকাদ্দেসুর রহমান বলেন, ‘হঠাৎ করেই ভিড় ব্যাপক বেড়ে গেছে। এ নিয়ে আমরাও আতঙ্কিত। আমরা চেয়েছিলাম পার্শ্ববর্তী স্কুলের মাঠে গিয়ে ভাতার টাকা দিতে। কিন্তু সেখানে বাজার বসায় বাধ্য হয়ে ব্যাংক থেকেই আমাদেরকে ভাতার টাকা দিতে হচ্ছে।