নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের শালাইপুর কাচারীপাড়া গ্রামে মুকুল মালিথা (৫৫) কে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫), ছেলে মেহেদী হাসান (১৬) ও মেয়ে নিশি খাতুন (২৫) কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলে স্ত্রী নাসিমা বেগম পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিলেন- পরকীয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় তিনি তার স্বামীকে হত্যা করেছেন।
জানা যায়, স্বামী মুকুল মালিথা তাঁতের কাজ করেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে। এ সুযোগে স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫) পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ননদের স্বামী (নন্দাই) স্বপনের (৪৫) সঙ্গে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারা অবাধে মেলামেশা করছিলেন।
কিন্তু সম্প্রতি করোনা সংকটের কারণে কাজ বন্ধ থাকায় স্বামী মুকুল বাড়িতে চলে আসেন। এতে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়ান তিনি। এতেই পথের কাঁটা সরাতে স্ত্রী ও প্রেমিক মিলে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত মুকুলকে তারা শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
মর্মান্তিক এবং সিনেমাটিক এ ঘটনাটি ঘটে পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের শালাইপুর গ্রামে। শুক্রবার (১ মে) ভোরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। পুলিশ স্ত্রী নাসিমা খাতুনের স্বীকারোক্তির পরে তার সন্তানদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পুলিশ তার পরকীয়া প্রেমিক স্বপনকে আটক করেছে।
নিহত মুকুল মালিথা শালাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে এবং তার স্ত্রী নাসিমার প্রেমিক স্বপন একই এলাকার রমজান খন্দকারের ছেলে ও ডাক বিভাগের একজন কর্মচারী।
পরিবারের বরাত দিয়ে পাবনা থানা পুলিশের ওসি নাসিম আহম্মদ জানান, তাঁত শ্রমিক মুকুল মালিথা শাহজাদপুরে তাঁতের কাজ করতেন। এরই মধ্যে তার স্ত্রী নাসিমা নন্দাই (ননদের স্বামী) স্বপনের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। মকলের অনুপস্থিতিতে প্রেমিক স্বপনের সাথে নাসিমা অবাধে মেলামেশা করতে থাকেন। সম্প্রতি করোনা সংকট শুরু হলে মকল মালিথা বাড়ি আসেন। এতে স্ত্রী নাসিমা ও তার পরকীয়া প্রেমিকের কাছে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মুকুল। একপর্যায়ে স্ত্রী তার প্রেমিক স্বপনের সঙ্গে মুকুলকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ফজরের নামাজের সময় স্ত্রী নাসিমা তার প্রেমিকের সহায়তায় স্বামী মুকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
হত্যার পর স্ত্রী কান্নাকাটির অভিনয় করে যে, তার স্বামী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পাবনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ লাশের গলায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে সন্দেহ হলে স্ত্রী নাসিমা ও তার ছেলে-মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রেমিক স্বপনকে আটক করে।