বেড়া প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনা পরিস্থিত মধ্যেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাইকিং করে উপবৃত্তির তথ্য সংগ্রহের কথা বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্কুল মাঠে ব্যাপক জমায়েত করেন অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক।
গত শুক্রবার (৮ মে) সকালে এমন জমায়েতের আযোজন করেন প্রধান শিক্ষক মো. শামীম মোল্লা।
শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির তথ্য সংগ্রহকে কেন্দ্র করে সংগঠিত এই জমায়েতের ছবি ও সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আজ শনিবার ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বিষয়টির জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের অসচেতনতা ও অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে ১ম থেকে অষ্টম শ্রেণির মোট এক হাজার ৬৮২ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। প্রাথমিক স্তরে এত বেশি শিক্ষার্থী জেলার আর কোনো বিদ্যালয়ে নেই বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানের জন্য কয়েকদিন ধরে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মতৎপরতা চলছে। এরই অংশ হিসেবে হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মাইকিং করে অভিভাবকদের মুঠোফোনের নম্বর নিয়ে আসতে বলে। এ খবর প্রচার হতেই বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির কয়েকশ’ অভিভাবক শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত হন। এতে বিদ্যালয়ের মাঠে সৃষ্টি হয় ব্যাপক জমায়েত। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা প্রচন্ড ভিড়ে অভিভাবক শিক্ষার্থীরা একে অপরের গায়ের সঙ্গে লেপ্টে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ বিষয়টি ছবিসহ স্থানীয় কয়েকজন ফেসবুকে প্রকাশ করলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম মোল্লা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ১ম থেকে চতুর্থ শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থীকে অভিভাবকের মুঠোফোনের নম্বর নিয়ে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু এর জন্য যা ঘটে গেছে তা সত্যিই অনাকাঙ্খিত ও বিব্রতকর। ভুল বুঝে বেশির ভাগ অভিভাবকই সন্তানসহ বিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত হন। এতে আমরাও হতভম্ব হয়ে পড়ি।
এ ব্যপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এভাবে মাইকিং করে শিক্ষার্থী অবিভাবকদের জমায়েত করার আমাদের কোন নির্দেশনা নেই; তবে শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা মোবাইল ফোনে অবিভাবকদের আইডি কার্ডের নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করার কথা। ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত উদ্যেগেই এমন কাজ করেছে।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমি আজ (৯ মে) ফেসবুকে দেখার পর জানতে পারি। কেন এমন একটি ঘটনা ঘটল সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।