Tuesday, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

বঙ্গবন্ধু, ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধি এবং নগরবাড়ী ঘাট, পাবনা…

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

আবদুল্লাহ আল মোহন

১.
আমরা জানি, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও তাদের এদেশি দোসর-দালালদের হাতে কমপক্ষে পাঁচ লাখ নারী নির্যাতনের শিকার হন। মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশে নির্যাতিত নারীরা সামাজিক অস্বীকৃতির মুখে পড়েন, তাঁরা হয়ে পড়েন আশ্রয়হীন, নিন্দার পাত্র, হেয় হবার পাত্র। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রতিকূল অবস্থায় থাকা এবং অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক দিক হতে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পরা সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু স্বল্পসামর্থ্য দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশুদের পুনরবাসিত করার। মুক্তিযুদ্ধের নির্যাতিত নারীদের সামাজিক স্বীকৃতির জন্য ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধিটিও বঙ্গবন্ধুই দিয়েছিলেন।
২.
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত পাবনার নগরবাড়ী ঘাট হতে কাজীর হাট পর্যন্ত বন্যা প্রতিরোধক বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে পাবনার বেড়া উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে যান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কয়েকজন নারী বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর নজরে বিষয়টি আসলে তিনি ওই নারীদের আসতে দেয়ার জন্য নিরাপত্তাকর্মীদের আদেশ দেন। অনুমতি পেয়ে ওই নারীরা বঙ্গবন্ধুর কাছে ছুটে আসেন। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নির্যাতিত হবার ভয়ঙ্কর সব ঘটনার কথা বলেন। তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে বলেন, কিভাবে তারা স্বাধীন দেশে নিগৃহীত হচ্ছেন, আত্মপরিচয়হীনতায় ভুগছেন, আশ্রয়হীন হয়ে দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর চোখ টলমল করে উঠে। তাঁদের পুর্নবাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন বঙ্গবন্ধু।
৩.
সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-
“আজ থেকে পাকবাহিনীর দ্বারা নির্যাতিতা মহিলারা সাধারণ মহিলা নয়, তারা এখন থেকে ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত। কেননা দেশের জন্যই তাঁরা ইজ্জত দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে তাদের অবদান কম নয় বরং কয়েক ধাপ উপরে, যা আপনারা সবাই জানেন, বুঝিয়ে বলতে হবে না। তাই তাদের বীরাঙ্গনার মর্যাদা দিতে হবে এবং যথারীতি সম্মান দেখাতে হবে। আর সেই সব স্বামী বা পিতাদের উদ্দেশ্যে আমি বলছি যে, আপনারাও ধন্য। কেননা এ ধরনের ত্যাগী ও মহত স্ত্রীর স্বামী বা পিতা হয়েছেন। তোমরা বীরাঙ্গনা, তোমরা আমাদের মা।”
মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীরা সেদিন থেকে ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধিতে ভূষিত হন। আর সেই সাথে পাবনার নগরবাড়ী ঘাটের সেই জনসভাটি ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকে।

(তথ্যসূত্র: বঙ্গবন্ধুর নারী ভাবনা : পূরবী বসু, পৃষ্ঠা: ১৪, সারাবেলা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)

আবদুল্লাহ আল মোহন
১৬ মে, ২০২০

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর