গোলাম মাহবুব : করোনা দূর্যোগের বৈশ্বিক মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ থেমে গেছে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। করোনা বিস্তার রোধকল্পে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সকল মার্কেট, দোকানপাট। এমনি মহামারি দূর্যোগের মধ্যে বুধবার (২০ মে) মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম ও কিছু দুস্থ-দরিদ্র প্রায় ৩০০ পরিবারের মাঝে খলিলপুর দারুল হাদিস মডেল মাদরাসা ও মসজিদের পক্ষ থেকে খাদ্য ও ঈদ সমাগ্রী বিতরণ করা হয়।
খাদ্য ও ঈদ সমাগ্রী বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন অত্র মাদরাসার সভাপতি মো. আব্দুস সাত্তার, মাদরাসার অধ্যক্ষ শামিম বিন নুর হোসেন, মো. আ. আলিম খান, সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, কাশিনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ।
সম্পুর্ণ নিরাপদ দূরুত্ব বজায় রেখে জনসমাবেশ এড়িয়ে মসজিদের সমানে থেকে কিছু লোকের মাঝে বিতরণ করা হয়। পরে অবশিষ্ট খাদ্য সমগ্রী দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেয়া হয়।
মাদরাসা ও মসজিদের পক্ষে খাদ্য ও ঈদ সমাগ্রী সহযোগিতার পৃষ্ঠপোষকতা করেন বর্তমান সভাপতি মো. আব্দুস সাত্তার এর আমেরিকা প্রবাসী ছেলে অধ্যাপক শেখ গোলাম মোস্তফা (টুটুল)। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ শামিম বিন নূর হোসেন বলেন “এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক শেখ গোলাম মোস্তফা (টুটুল)। তিনি জীবনের সমস্ত আয় দিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, এলাকার সকল মানুষের বিপদে আপদে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন।”
খাদ্য ও ঈদ উপহার বিতরণের বিষয়ে মাদরাসার সভাপতি মো. আব্দুস সাত্তার বলেন “আমরা প্রতি বছরই ঈদের পূর্বে খাদ্য ও ঈদ সমাগ্রী বিতরণ করে থাকি। এ বছর নতুনভাবে মাদরাসা ও মসজিদের পক্ষ থেকে বিতরণ শুরু করলাম। আল্লাহ্ সহায় থাকলে আমরা সারা জীবন সহায়তা প্রদান করে যেতে চাই।”
জানা যায়, খলিলপুর দারুল হাদিস মডেল মাদরাসা ও মসজিদ ২০১৯ সালে স্থাপিত হয়। মাদ্রাসায় বর্তমানে প্রায় ১০০ জনের উপরে ছাত্র পড়াশুনা করে। কোন ছাত্রী এখন পর্যন্ত ভর্তি করা হয়নি। অতি অল্প সময়ে প্রায় ১ বছরের মধ্যে মাদরাসাটি বর্তমানে তিন তলা ভবন বিশিষ্ট।
মাদরাসা সম্পর্কে অধ্যক্ষ শামিম বিন নূর হোসেন বলেন, “মাদরাসাটিতে বর্তমানে হিফজ, নুরানি, নাজিয়া বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া এখানে প্লে থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে। এতে প্রায় ১০০ জনের বেশি ছাত্র ভর্তি রয়েছে। পরিকল্পনা রয়েছে আগামী বছর থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানে অস্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হবে। সে জন্য সকল কাগজপত্র জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। এখানে এ পর্যন্ত শুধু ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। আগামীতে আলাদা ভাবে ছাত্রীদেরকেও ভর্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
এছাড়া মাদরাসার পক্ষ থেকে গরিব, দুস্থ মানুষের সেবা ও সহযোগিতা করা, গরিব মেধাবি ছাত্রদের সার্বিক সহযোগিতা করার ব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি অত্র এলাকার সকল মানুষকে মাদরাসার সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
খলিরপুর গ্রামের মানুষের সর্বিক উন্নয়নের জন্য একটি উন্নত মানের মাদরাসা এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। গ্রামবাসীর এই স্বপ্নকে পুরন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন আমেরিকা প্রবাসী অধ্যাপক শেখ গোলাম মোস্তফা (টুটুল)। তিনি তার স্বপ্নের গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন এই মাদরাসা। তিনি মাদরাসার সার্বিক উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।