ডেস্ক রিপোর্ট : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের স্বীকৃত কোনো ওষুধের সন্ধান এখনও মিলেনি। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি থেকে রক্ষা পেতে টিকা ও কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যে প্রাচীন হোমিও পদ্ধতি করোনার চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখছে বলে ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আলোচিত হচ্ছে। চলতি মাসে বাংলাদেশেও করোনা প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে সম্মুখ সমরে থাকা পুলিশ বাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত পুলিশের অনেক সদস্যই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন হোমিও চিকিৎসায়। ইতোমধ্যে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক জড়িত হয়েছেন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। হাসপাতালের আউটডোরে তিনি একটি ডিসপেনসারিও দিয়েছেন। তার চিকিৎসায় করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের অনেকেই সুফল পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
করোনা প্রতিরোধে Arsenic Album 30 কিভাবে শরীরে কাজ করে তা বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখুন :
হোমিও চিকিৎসক রাশিদুল হক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে গত ১৬ মে থেকে পুলিশ হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, করোনার কোনো চিকিৎসা নয়, তবে প্রতিরোধমূলক ওষুধ দিচ্ছেন তিনি, যা কার্যকর হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
রাশিদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রতিরোধমূলক ওষুধ দিয়েছি। তাদের কেউ এখনো করোনা পজিটিভ হননি। আর ৫০ জন কোভিড-১৯ রোগীকে ওষুধ দিয়েছি যা সেবন করে এসব রোগী তুলনামূলক দ্রুততম সময়ে সুস্থ হয়েছেন।’
তার মতে, তিনি যে ওষুধ দিচ্ছেন, তা প্রতিরোধমূলক এবং এটি নিয়ম মতো সেবন করলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও সক্রিয় হয়ে উঠে এবং মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
ইতোমধ্যেই পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও স্বরাষ্ট্রসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়েও তিনি চাহিদা পেয়ে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সরবরাহের দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনার কোনো নির্ধারিত চিকিৎসা নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশে এর চিকিৎসা হচ্ছে এবং অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। (সূত্র : বিবিসি বাংলা)
এরই ধারাবাহিকতায় পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় ছয় হাজার পরিবারের প্রায় ২৪ হাজার সদস্যকে বিনামূল্যে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সরবরাহ করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুরে ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল শহরের নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছে এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধ Arsenic Album 30 হস্তান্তর করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পাবনা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক) ডা. জাকারিয়া খান মানিক ও স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক আবুল হোসেনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। ভাঙ্গুড়ায় এ পর্যন্ত ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ডা. জাকারিয়া খান মানিক বলেন, করোনা প্রতিষেধক কোনো ওষুধ এখনো তৈরি হয়নি। তবে বিতরণকৃত ঔষধ মানুষের শরীরে করোনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা তৈরি করে। এটি নিয়ম মতো সেবন করলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও সক্রিয় হয়ে উঠে এবং মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এরইমধ্যে ভাঙ্গুড়ায় করোনা আক্রান্ত একাধিক ব্যক্তির উপর এই ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছে। যা কার্যকর হয়ে তারা সুস্থ হয়েও উঠেছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই করোনা প্রতিরোধে এখন হোমিওপ্যাথিক ওষুধের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ছে। ব্যবহৃত এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তাই কারোর শরীরে করোনার যেকোন উপসর্গ দেখা দিলে এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবনের সঙ্গে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করতে পারেন।
ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, পৌরবাসীকে করোনামুক্ত রাখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুসরণ করে সকল ব্যবস্থাই নিয়েছি। পৌরশহরের মধ্যে তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠা একজন প্রকৌশলী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাই অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে ২৪ হাজার পৌরবাসীকে বিনামূল্যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবনের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে। একই সঙ্গে করোনার দুর্যোগ মোকাবেলায় ভাঙ্গুড়া পৌরশহরে সরকারের সকল নির্দেশনা শতভাগ পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।