Friday, ডিসেম্বর ৮, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধারবেড়ায় বালুবাহী ড্রাম ট্রাক চাপায় ঠিকাদার নিহতমহাসড়কের দুপাশের গাছ চালক-যাত্রীদের আতঙ্ক

অভিযান-আন্দোলনেও বন্ধ হয়নি বেড়ার যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

বেড়া প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু তোলা বন্ধে প্রায়ই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত টিম। বালু তোলার কারণে নদী ভাঙনের শিকার এলাকাবাসী একাধিকবার এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন, সভা-সমাবেশও করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও অপতৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমে রূপপুর ইউনিয়নের ঘোপসিলেন্দা গ্রামে যমুনার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার চরপেঁচাকোলা, মোহনগঞ্জ, দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা, চরনাকালিয়াসহ কয়েকটি গ্রামও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বালু তোলার ফলে ২০১৭ সালে পেঁচাকোলা গ্রামে যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ৫০ মিটারেরও বেশি অংশ ধ্বসে পড়ে। হুমকির মুখে পড়ে জেলা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। পরে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তড়িঘড়ি করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ধ্বসে যাওয়া অংশ মেরামত করে। এবারের বর্ষা মৌসুমেও পেঁচাকোলা এলাকার তীর রক্ষা বাঁধে ধস ও ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী ২৪ জুন সেখানে গিয়ে হাতেনাতে দুজন ট্রাকচালককে আটক করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তীর রক্ষা ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের জন্য বালু তোলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে পাউবো মোহনগঞ্জ থেকে নগরবাড়ী পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পার্শ্ববর্তী যমুনা নদী থেকে বালু তোলা বন্ধের জন্য প্রশাসনিক সহায়তা চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছে। কিন্তু এর পরেও বালু তোলা বন্ধ হয়নি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেড়া উপজেলার মোহনগঞ্জ থেকে ঢালারচর পর্যন্ত যমুনা নদীর প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশ থেকে অবাধে বালু তোলা হচ্ছে। প্রতিদিন দুই শতাধিক নৌযানে খননযন্ত্র (ড্রেজার) বসিয়ে বালু তোলা হয়ে থাকে। অথচ এই এলাকায় বালু তোলার জন্য কোনো বালুমহাল নেই। উপজেলার পায়না, মোহনগঞ্জ, পেঁচাকোলা, নাকালিয়া, কৈতলা, রাকশা, নগরবাড়ী, কাজীরহাটসহ বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বালু তোলার সঙ্গে জড়িত। এসব ব্যক্তিরা রাতারাতি প্রচুর অর্থের মালিক হয়ে উঠেছেন বলে জানান এলাকাবাসী। অবৈধ বালু তোলা বন্ধের দাবিতে গত এক বছরের মধ্যে দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা ও চরনাকালিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। নাকালিয়া বাজারে সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচিসহ বালু তোলার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে বার বার অভিযান চালিয়ে কিছু বালুদস্যুকে সাজা দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু তারপরেও অবৈধ বালু তোলা চলছেই।
মালদাপাড়া গ্রামের ওয়াদুদ সরকার, গোলজার মল্লিকসহ চার-পাঁচজন কৃষক জানান, অবৈধ বালু তোলার কারণে এমনিতেই নদীভাঙনের ভয় রয়েছে। এর ওপর এবার তাদের ডুবে থাকা ফসলি জমি থেকে খননযন্ত্রের (ড্রেজার) মাধ্যমে বালু ও মাটি তোলা হচ্ছে। প্রশাসন দ্রুত বালু তোলা বন্ধ না করলে তারা মানববন্ধনসহ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।
পাউবোর বেড়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, যমুনা নদীর যেসব এলাকা থেকে বালু তোলা হচ্ছে তার কাছেই রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও তীর রক্ষা বাঁধ। অবৈধ বালু তোলার কারণে গুরুত্বপূর্ণ ওই দুটি স্থাপনা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয় আমরা প্রশাসন বরাবর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। আর যমুনার ওই এলাকায় কোনোভাবেই বালু মহাল করা যাবে না বলে সপ্তাহ খানেক আগে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দিয়েছি।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে আমি একের পর এক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেভাবেই হোক অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবেই।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর