আরিফ খাঁন, বেড়া : পাবনার বেড়া উপজেলায় বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে যমুনা নদীর ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েছে। অবৈধভাবে বালু তোলার দায়ে ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়, ৩ জনকে তিন মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ৯ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী।
এ সময় যমুনা নদীতে বালু তোলার সময় নয়টি খননযন্ত্রযুক্ত নৌযানসহ ১২ জনকে আটক করা হয়। আদালত আটক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নয়জনের কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। বাকি তিনজনের প্রত্যেককে তিনমাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া খননযন্ত্রযুক্ত নৌযানগুলোর মূল যন্ত্রাংশ আদালতের নির্দেশে ধ্বংস করা হয়।
আদালতের কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত বেশ কিছু অভিযান চালানো হলেও আজকের (৯ জুলাই) অভিযানটিই ছিল সবচেয়ে বড়। উপজেলার নগরবাড়ী থেকে শুরু করে বেড়া পৌর এলাকার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কয়েকটি স্পিডবোট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন।
এলাকাবাসী ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। অবৈধ বালু তোলার ফলে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে নদীভাঙন দেখা দেওয়ার পাশাপাশি তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস দেখা দেয়। সম্প্রতি যমুনা তীরবর্তী কয়েকটি স্থানে বর্ষায় ডুবে যাওয়া ফসলি জমি থেকেও বালু ও মাটি উত্তোলন শুরু করে বালুদস্যুরা। যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে উপজেলার নগরবাড়ী থেকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যমুনা নদীতে অভিযান চালান। এ সময় বড় ধরনের নয়টি খননযন্ত্রযুক্ত নৌযান আটক করে মোহনগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। এর পাশাপাশি বালু তোলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জনকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত আটক করা ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জনকে বিভিন্ন অংকের মিলিয়ে মোট পাঁচ লাক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা শোধ করে তাঁরা ছাড়া পান। অন্যদিকে আদালত মো. নূরনবী (২২), নাসিরউদ্দিন (৩০) ও শাহেদ আলী (৩১) নামের তিনজনের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা শোধ না করায় আদালত তাদের প্রত্যেককে তিনমাস করে কারাদণ্ড দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, অবৈধ বালু তোলার সঙ্গে জড়িতদের আমরা জরিমানা যেমন করেছি তেমনি তাদের খননযন্ত্রযুক্ত নৌযানগুলোর মূল যন্ত্রাংশ ধ্বংস করেছি। আমরা এ ধরনের কঠোর অভিযান বারবার পরিচালনা করব যাতে অবৈধ বালু তোলা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।