স্টাফ রিপোর্টার : ১৩ আগস্ট ছিল যশোরের মেয়ে ফারহানার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। তিনি সেই অনুষ্ঠানে মোটরসাইকেল চালিয়ে যোগ দেন। সেই ছবি নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে।
সবুজ রঙের পোশাক পরা এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী। সবাই নিজ নিজ মোটরসাইকেলে। তাদের মাঝখানে সোনালি রঙের পোশাক পরে এক কনে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। মোটরসাইকেলে করে সবাইকে নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে কনের যোগ দেওয়ার এই ছবি ও ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল। ব্যতিক্রমী আয়োজন করা এই কনের নাম ফারহানা আফরোজ। বাড়ি যশোরে।
১৩ আগস্ট ছিল ফারহানার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্য আমি কিছু করিনি। আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যান। আমি মোটরসাইকেল চালাতে পারি। আমারও ইচ্ছে হয়েছে। আমি ইচ্ছেপূরণ করেছি। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই-আনন্দ করেছি।’
গায়ে হলুদের দিনের আয়োজন সম্পর্কে ফারহানা আফরোজ বলেন, ‘যশোর শহরের ডাকঘরপাড়ার একটি বিউটি পার্লার থেকে সাজসজ্জা করেছি। সেখান থেকে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরে চক্কর দিয়েছি। পরে গায়ে হলুদের আসরে গিয়েছি।’
তার বাড়ি যশোর শহরের সার্কিট হাউস এলাকায়। যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন ফারহানা। এখন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) থেকে এইচআর-এ এমবিএ করছেন ফারহানা। তার স্বামীর বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ি-কৃষ্ণপুর গ্রামে। স্বামী হাসনাইন রাফি পেশায় একজন টেক্সটাইল প্রকৌশলী এবং শ্বশুর আব্দুর রশিদ শেখ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার।
ফেসবুকে কনের এমন ছবি দেখে ইতিবাচক-নেতিবাচক দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই মানুষ দেখিয়েছেন। যারা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তাদের বিষয়ে ফারহানা আফরোজ বলেন, “বাইক র্যালির ছবি ফেসবুকে আসার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন। তারা আমার বাইক চালানোর বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। ফলে, তারা ছবি ও ভিডিও দেখে বেশ আনন্দ করেছেন। কিন্তু নেটিজেনরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে পারছে না। তারা আমার চারিত্রিক সনদ দিচ্ছেন। এটা আমি মানতে পারছি না। যে কারণে ছবি ভাইরাল হওয়ার পর আমি নিজেই বাইক র্যালির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করি।”
শ্বশুরবাড়ি থেকে একটি বাইক উপহার পাবেন জানিয়ে ফারহানা বলেন, “শ্বশুরের প্রতিশ্রুতি মোটরবাইকটি ঢাকা থেকেই কেনার ইচ্ছে আছে।”
শ্বশুর আব্দুর রশিদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলের বিয়ে হয়েছে তিন বছর আগে। বিয়ের পরপরই আমার পুত্রবধূর বাবার মৃত্যুর কারণে তখন কোন অনুষ্ঠান করা হয়নি। এখন আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে পুত্রবধূকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি।
তিনি আরও বলেন, আমার বউমার মোটর সাইকেল চালানোর বিষয়ে এত আলোচনা-সমালোচনার কিছু দেখি না। কিছু লোক পিছু কথা বলবেই। এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। তার পূত্রবধূকে তিনি শীঘ্রই মোটর সাইকেল কিনে দেবেন বলেও তিনি জানান।