Sunday, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীকে নির্বাচনে চান পাবনার সংস্কৃতিকর্মীরাওনার্স পরিচয় দেন ডাক্তার, দিচ্ছেন সর্ব রোগের চিকিৎসাডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার

পাবনার ১৯২ তম ‘জন্মদিন’ আজ।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

পাবনা দেশের অন্যতম প্রাচীন জেলা। পাবনার ১৯২ তম ‘জন্মদিন’ আজ। ১৮২৮ সালের ১৬ অক্টোবর তৎকালীন বৃটিশ সরকারের ৩১২৪ নং স্মারকে পাবনাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
পাবনা জেলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৯০ সালে বর্তমান পাবনা জেলার একটা বড় অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ওই সময় জেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১৮২৮ সালে পাবনায় তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার ম্যাজিস্ট্রেট মি. এ ডাব্লিউ মিল্সকে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।

এর চার বছর পর ১৮৩২ সালে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটের পরিবর্তে ডেপুটি কালেক্টর নিয়োগের মাধ্যমে পাবনা পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা পায়। ১৮৫৫ সালে ময়মনসিংহ জেলা থেকে সিরাজগঞ্জ থানাকে পৃথক করে পাবনা জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৮৭৮ সালের ১৯ জানুয়ারি পাবনায় প্রথম রেলপথ স্থাপিত হয়। জেলায় প্রথম মোটর সার্ভিসের প্রবর্তন করা হয় ১৯২৬ সালে। ১৯৪০ সালের পর পাবনা শহরে রিকশার প্রচলন ঘটে।

হোসিয়ারী শিল্প, তাঁত শিল্প, কাঁচি শিল্প, বেনারসি-কাতানসহ অন্যান্য শিল্প সমৃদ্ধ এই জেলা এক সময় দেশের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল।

বর্তমানে পাবনা জেলার আয়তন ৩৫১.৫ বর্গ কিলোমিটার। জেলায় উপজেলার সংখ্যা ৯ টি এবং ইউনিয়ন সংখ্যা ৭৩ টি।

২০১০ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী জেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯৭ হাজার জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৫০ হাজার এবং নারী ১২ লাখ ৪৭ হাজার জন।

পাবনার উপজেলাগুলো হলো পাবনা সদর, আটঘোরিয়া, ঈশ্বরদী, বেড়া, সুজানগর, সাঁথিয়া, চাটমহর, ভাঙ্গুরা ও ফরিদপুর।

ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতিতে পাবনা জেলার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ভাষা সংগ্রাম আর সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এই জেলার মানুষদের বীরত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে।

বিশ্ব বরেণ্য কবি-সাহিত্যিক, রাজনীতিক সাংবাদিক, শিল্প উদ্যোক্তা, বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, অভিনেতা-অভিনেত্রী পাবনা তথা গোটাদেশকে বিশ্ব দরবারে স্বগৌরবে তুলে ধরেছে।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মভুমি পাবনা। এ পাবনায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব দর্শনীয় স্থান ও কালের স্বাক্ষী হয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্থাপনা।।

পাবনার হেমায়েতপুরে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল, সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুরের জন্মভুমি।

মসজিদ মন্দির জমিদারী আমলের বাড়ী ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পর্যটকদের নজরকাড়ে।

বৃটিশ স্থাপত্যের টেকসই নিদর্শন দেশের একমাত্র বৃহত্তর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত রেল সেতুর সাথে বর্তমানে লালন শাহ সেতু যুক্ত হয়ে এক সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবার হাতছানি দিচ্ছে।

ছুটির দিন বা বিশেষ দিনে দূর দূরান্তের পর্যটক বেড়াতে আসে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে দেশের এই স্থানটি দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট হতে পারে।

বিশ্ব দরবারে স্বগৌরবে তুলে ধরার দেশের একমাত্র পারমাণবিক প্লান্ট পাবনায় অবস্থিত।

স্কুল কলেজ, বিশেষায়িত হাসপাতাল শিল্প কলকারখানার যে বিকাশ রয়েছে তা পাবনাবাসীর জন্য আর্শিবাদ স্বরূপ।

কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত পাবনাবাসীর প্রাণের দাবীগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঢাকা পাবনা সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ, মেডিকেল কলেজ চালু, যানজট নিরসন, ইছামতী খনন, বিনোদন পার্ক এ সকল পাবনাবাসীর প্রাণের দাবী।

এছাড়া পাবনা পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করার দাবী পাবনাবাসীর এবং সময়ের সাথে সাথে দেশের যে বিকাশ হচ্ছে তাতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুতে পাবনা জেলার সংযুক্তি সহ বেশ কয়েকটি দাবী পাবনার জনমানুষের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে।

এই সেতু হলে রাজধানীর সাথে পবনা সহ কয়েকটি জেলার যাতায়াতের দূরত্ব বর্তমান দূরত্বের চেয়ে ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে।

পাবনা শহরের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদী আজ মৃত প্রায়।

এক সময় বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে ইছামতি দিয়ে রাজার মত যেতেন আর লিখতেন কবিতা। সেই ইছামতি এখন ময়লা আবর্জনায় ভরা।

এখন পাবনার মানুষের সবচেয়ে বড় দাবী ইছামতি খনন।

পাবনার একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক লেখক কলামিস্ট রণেশ মৈত্র জানান, ইছামতি নদী খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। শহরকে সুন্দর করতে ইছামতি নদী খননের বিকল্প নেই।

পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল মতিন খান জানান, দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর সাথে পাবনা জেলার সংযুক্তি স্থাপন হলে শুধু পাবনা নয় গোটা উত্তরবঙ্গে অর্থনৈতিক নতুন দিন আসবে।

মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যুরো চিফ সাংবাদিক উৎপল মীর্জা বলেন, পাবনাবাসীর যৌক্তিক দাবী বাস্তবায়ন করতে হবে। দীর্ঘকাল পর পাবনার জন্য রেল সুবিধা এলেও রাজধানীর সাথে পাবনার সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছে না। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।

শিকড়ের মায়া জড়ানো আবাস ভূমিকে অপরূপ সুন্দর করে গড়ে তুলতে কে না চায়। এসব জন দাবী পূরণ হলে পাবনা যোগাযোগ ও অর্থনীতিক ভাবে নতুন দিনের সূচনার পাশাপাশি এসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলেই একটি অপরূপ সুন্দর শহর হবে পাবনা।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর