বিশেষ প্রতিনিধি : চলছে জমজমাট নির্বাচনী প্রচার। দিন-রাতের বালাই নেই। বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, মার্কেট, কাঁচাবাজার- সব চষে বেড়াচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রামের অলিগলি প্রার্থীদের পোস্টারে ঠাসা। দোয়াপ্রার্থীদের ব্যানারে সয়লাব সব এলাকা। বাজার-ঘাট, পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানগুলোতে নেতাকর্মী-সমর্থকদের ভিড়। চলছে খাওয়া-দাওয়া আর চা পানের হিড়িক। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বেড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে উপজেলা পরিষদের আসন্ন উপ নির্বাচনে প্রার্থীদের সর্বাত্মক প্রচারে ঘাম ঝরাতে দেখা গেছে। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতিক পেতে তারা ছুটছেন প্রতিনিয়ত। বিতরণ করছেন লিফলেট, দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। প্রতিদিন বিকেলে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় মিছিল বের করছেন তারা।
গত ১০ সেপ্টেম্বর বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন আব্দুল কাদেরের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশনার। এ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের প্রায় দেড় ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন- জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিয়া বাবু, হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, পুরাণভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান কেএম রফিকুল্লাহ্, রুপপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন, আওয়ামী নেতা হুমায়ন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাবেক নেতা প্রবীর গোস্বামী বাবু, এডভোকেট ডিএম সাইফুল ইসলাম, বেড়া পৌর আওয়ামী লীগের নেতা নজরুল ইসলাম ও সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের স্ত্রী রওনাক জাহান রানু। দেড় ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে উল্লিখিত প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নৌকা প্রতিকের জন্য। তবে শুরু থেকেই মাঠ গরম করে রেখেছেন জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিয়া বাবু। তিনি বেড়া উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম কমিটির আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়ন শাখার প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক ও মৃত্যু পর্যন্ত (২০০২ সাল) সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা আলহাজ্ব জহুরুল হক মিয়া’র সন্তান রেজাউল হক মিয়া বাবু তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন আওয়ামীলীগ নেতা। দলের কাছে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত সৈনিক। তাই তার প্রার্থীতাকে সবাই সসম্মানে গ্রহণ করেছেন। জানা যায়, তৃনমূলের নেতাকর্মী ও জনসাধারণের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকার অভুতপূর্ব উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন রেজাউল হক মিয়া বাবু।
সুদুর রাজনৈতিক পরিচিতির বাইরেও তরুণ সমাজসেবক হিসেবে সুপরিচিত রেজাউল হক বাবু কাজ করছেন সমাজের উন্নয়নে। এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন এবং জনকল্যাণের কাজ করে উপজেলাবাসীর গভীর ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি। জনগণের ভালোবাসায় তিনি সিক্ত; তাই জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এবার তিনি উপজেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলার মাশুমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী মিরোজ হোসেন, রুপপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জল, জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী আজিবর রহমান কাশিনাথপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি মোখলেসুর রহমানসহ অর্ধশাধিক আওয়ামী নেতাকর্মী এ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জানান, রেজাউল হক বাবু সততা, মেধা, দলের জন্যে সার্বক্ষণিক পরিশ্রম ও সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার কারণেই জনপ্রিয় হয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় রেজাউল হক বাবু উপজেলা পরিষদের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন বলে তাদের বিশ্বাস। কেননা, বাবু একজন জনপ্রিয়, জনদরদি ও দানশীল নেতা হওয়ায় গত ইউপি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জাতসাখিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল হক বাবু জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা ও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন। সেই বিবেচনায় তিনি বেড়া উপজেলা পরিষদের উপ নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দেবেন। তাছাড়া আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে আমাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখতে উপজেলার আওয়ামী নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ একজোট হয়েছে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি ব্যাপক ভোটে জয় লাভ করে দলের সুনাম ধরে রাখবো ইনশাআল্লাহ এবং আমি আগেও যেমন সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করেছি, আগামীতেও সবসময় পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
উল্লেখ্য, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ নভেম্বর রবিবার পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার। দাখিলের শেষ তারিখ ১৮ ও ২০ নভেম্বর। আপিল নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ২১-২২ নভেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ নভেম্বর সোমবার। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ মঙ্গলবার ২৪ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ ১০ ডিসেম্বর, সকাল ৯টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ।