নিজস্ব প্রতিনিধি : গেজেটে প্রকাশিত বর্ধিত শহর এলাকার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে পাবনার সুজানগর পৌরসভার নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এজন্য নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল নিশি জারি করেছেন আদালত।
গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এর বিচারপতি মো: মজিবুর রহমান এবং এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামিম এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই আদেশ দেয়া হয়। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) আদেশের কপি গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
পাবনার সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বর সিদ্দিকুর রহমান এবং একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বর মোখছেদ আলীর দায়েরকৃত রীট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট এই আদেশ দেন।
এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও গত ২০ ডিসেম্বর আগের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র গ্রহন করায় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারকে মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন বাদির আইনজীবী।
রিট এর বাদি সিদ্দিকুর রহমান ও মোখছেদ আলী বলেন, ১৯৯৮ সালে সুজানগর পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকালে সাবেক সুজানগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মথুরাপুর, নারায়ণপুর ও কৃঞ্চপুর গ্রাম অজ্ঞাত কারণে পৌরসভা থেকে দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সুজানগর পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেয়র এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ওই তিন এলাকার জনসাধরণ পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেন। এরপর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী আব্দুল ওহাব পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর আবারো ওই তিন এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারন মানুষ তিন এলাকাকে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল এবং একই বছরের ৬ আগস্ট উল্লেখিত তিন এলাকা সুজানগর পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে পৌরসভার সব সুযোগ সুবিধাও ভোগ করছেন নাগরিকরা। কিন্তু পৌরসভার বর্ধিত নতুন শহর এলাকার ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করেই নির্বাচন কমিশন আগামী ১৬ জানুয়ারি’২০২১ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। চূড়ান্ত সরকারি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের দাবিতে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী কয়েক দফা মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী।
এমতবস্থায় বাদির আরজি আমলে নিয়ে মাননীয় হাইকোর্ট নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ক্যাবিনেট ডিভিশনের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, পাবনার জেলা প্রশাসক, সুজানগর পৌরসভার মেয়র, সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ভায়না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ এর উপসচিব, সহকারি সচিব এবং সুজানগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার এর বিরুদ্ধে রুলনিশি জারি করেন।
এদিকে আগের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিনে ২০ ডিসেম্বর ২ জন মেয়র এবং ৪৬ জন কাউন্সলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহন করায় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো: রওশন আলীকে মঙ্গলবার লিগ্যাল নোটিশ দেন বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট পঙ্কজ কুমার কুন্ডু।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রওশন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, কোর্টের কপি মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) তিনি আদালতের আদেশের কপি পেয়েছেন। যে কারণে আমরা এখন আর নির্বাচনের কোনো কাজ করছি না। নির্বাচন কমিশনকেও বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন থেকে যে আদেশ পাওয়া যাবে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।