Saturday, ডিসেম্বর ৯, ২০২৩
শিরোনাম
ডলি সায়ন্তনীর প্রার্থীতা ফেরার অপেক্ষায় সুজানগর, আমিনপুরের মানুষঅবহেলা অব্যবস্থাপনায় অকার্যকর পাবনার সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, বিপাকে কৃষকসাঁথিয়ায় ভোটার হালনাগাদকারীদের পাওনা দিতে গরিমসি করছেন নির্বাচন অফিসারআটঘরিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী আটকসাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা ॥ জনমনে অসন্তোষসাঁথিয়ায় চলাচলের রাস্তায় বেড়া,অবরুদ্ধ ১৬ পরিবারআটঘরিয়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনবেড়ায় পাট ক্ষেত থেকে ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধারবেড়ায় বালুবাহী ড্রাম ট্রাক চাপায় ঠিকাদার নিহতমহাসড়কের দুপাশের গাছ চালক-যাত্রীদের আতঙ্ক

বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কথাসাহিত্যিক এসএম ফজলুল হক মাস্টার ইউপি নির্বাচনের মাঠে

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বেড়া উপজেলার জাতসাখিনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা দিনরাত গণসংযোগ ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন নিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সেই সঙ্গে জনগনের কাছে হাজারও প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিফলেট বিতরণ করছেন। গণসংযোগ, উঠােন বৈঠক, পথসভা, শো-ডাউনসহ নানা কৌশলে প্রার্থীরা ইউনিয়নবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত জাতসাখিনী ইউনিয়নে ২১ জন প্রার্থী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। শনিবার (৯ জানুয়ারি) ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ২১ জনের পোস্টার দেখা যায়।

এ সময় জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কথাসাহিত্যিক ফজলুল হক মাস্টারকেও শো-ডাউন করতে দেখা যায়। তিন শতাধিক মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের কিছু নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করতে দেখা যায় তাকে। প্রায় ৩ ঘণ্টার শো-ডাউন শেষ হয় দুপুর ২টায়।

এ সময় কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম ফজলুল হক মাস্টারের সাথে। তিনি জানান, তিন যুগের অধিক সময় ধরে শিক্ষকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলাম। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বড় হয়ে উঠেছি, তাই রাজনীতিমুক্ত থাকতে পারিনি। ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল না। সম্প্রতি জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান আমার স্নেহভাজন ছাত্র রেজাউল হক বাবু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। স্থানীয় নেতাকর্মীরা এখন জাতসাখিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে প্রত্যাশা করছে। ইউনিয়নবাসীর স্বপ্ন আমাকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চায়। আমি আমার পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশি, সহকর্মী, ছাত্রছাত্রীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই এবং তাদের ইতিবাচক মতামত নিয়েই নির্বাচন করবো বলে আজ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলাম। দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী আমাকে মূল্যায়ন করবেন-সেই বিশ্বাস থেকেই মাঠে নেমেছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমি নির্বাচনের মাঠে থাকব এবং আমি বিশ্বাস করি- আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো।

জানা যায়, বীরমুক্তিযোদ্ধা এসএম ফজলুল হক মাস্টার ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১২ বছর জাতসাখিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ১৪ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত জাতসাখিনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২৬ মার্চ এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। ২৮ মার্চ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশীয় প্রশিক্ষণ এবং সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের পাতিরামে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে এলাকার প্রবীণব্যক্তিদের কাছে সমাদৃত ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। শিক্ষকতা ও রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সাহিত্য চর্চাও অব্যাহত রেখেছেন। ইতোমধ্যে তার বেশকিছু বই পাঠকনন্দিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা (কলি প্রকাশনী), রূপসী গায়ের ছন্দা (কলি প্রকাশনী), তুমিই প্রিয় বান্ধবী (কলি প্রকাশনী), ছাড়ায় ছড়ায় মুক্তিসেনা (কলি প্রকাশনী), চল যাই টুঙ্গিপাড়া (ডাংগুলি প্রকাশনী), ফজলুল হকের ছড়া (ডাংগুলি প্রকাশনী)। তাঁর রচিত অধিকাংশ বই মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে উপজীব্য করে। যা বাংলা একাডেমি’র বিগত বছরগুলির বই মেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলে।

এসএম ফজলুল হক সামাজিক নানান প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে জড়িত রেখেছেন। কাশিনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও শহীদ নুরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সদস্যসহ বেড়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং জাগ্রত সংঘ ক্লাব, কাশিনাথপুর খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, প্রয়াস পাঠাগারে সম্পৃক্ত ছিলেন ও আছেন। এছাড়াও বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও জাতসাখিনী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল- এর দায়িত্ব পালন করেন বিভিন্ন সময়ে। তার সামাজিক কর্মকাণ্ডের এখানেই শেষ নয়। করোনার প্রকোপকালীন তিনি নিজ উদ্যোগে অসহায় ও দরীদ্রদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সামাজিকভাবে নিজেকে নিবেদন করেছেন সমাজের প্রতিটি ভালো কাজে। চার সন্তানের জনক ফজলুল হক মাস্টার পারিবারিকভাবেও সুখি একজন মানুষ। তার বড় ছেলে এসএম সালাহউদ্দিন হক এমিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে এসএম সাফায়েত হক তুর্য ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বড় মেয়ে ফারজানা হক নিপা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। আর ছোট মেয়ে ফারহানা হক দিপা বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে শিক্ষকতা করছেন কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলে।

কথা হয় স্থানীয় স্কুল শিক্ষক নিপু রহমতুল্লাহ’র সাথে। তিনি বলেন, আমি তার ছাত্র। স্কুলজীবনে তার কাছ থেকেই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস শিক্ষা পাই। তিনি এমন একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমরা যারা তার ক্লাস করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি, তারাই উপলব্ধি করি তাকে। আমরা তাকেই চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যোগ্য মনে করছি। ব্যক্তিজীবনে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করেছেন, যা এলাকার সর্বজন বিদিত।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর