স্টাফ রিপোর্টার : নদী ও বিল বেষ্টিত পাবনার বেড়া উপজেলার রয়েছে অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল। তার মধ্যে প্রায় বাইশটি চরে রয়েছে মানুষের বসবাস। কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস এইসব চরে শুকনো মৌসুমে যোগাযোগের জন্য পায়ে হাঁটার পথ থাকলেও বর্ষা মৌসুমে তা একেবারেই থাকে না। জীবন ও জীবিকার জন্য নৌকা যেন নিত্যদিনকার অপরিহার্য জিনিস। প্রতিটি গ্রাম প্রতিটি বাড়ি যেন একেকটি আলাদা আলাদা দ্বীপ। তাই বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগের জন্য নৌকাই একমাত্র ভরসা। প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে একটি করে নৌকা। এসব নৌকাই তাদের প্রধান ভরসা। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আসা থেকে শুরু করে অসুখে বিসুখে জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালে পৌছানো সব কাজেই প্রয়োজন হয় নৌকার। তাছাড়া মাছ ধরা তো আছেই। তাই এ মৌসুমে নৌকা কেনার ধুম পরে যায় বেড়া উপজেলায়। বেড়া উপজেলার দশটি ইউনিয়নেই নৌকার ব্যবহার হয়। তার মধ্যে হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়ন, কৈটলা, নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, নগরবাড়ী, রূপপুর এসব ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি নৌকা তৈরি হয়। বর্ষার জলে ইতিমধ্যেই চরগুলো ডুবে গেছে। তাই রাস্তার পাশে, প্রতিটি কাঠের দোকানের সামনে এখন শুধুই নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ চলছে। বেড়ার সিএন্ডবি বাসষ্ট্যান্ডের পাশে আমির হোসেনের কারখানায় দেখা গেল নৌকা তৈরির ব্যস্ততা। তার দুটি কারখানায় বার জন মিস্ত্রী কাজ করে। তৈরি নৌকাগুলো সারিসারি রাখা হয়েছে। আর নিজে ব্যস্ত নতুন নৌকা তৈরিতে। তার কাছ থেকে জানা গেল কম দামের নৌকা তৈরিতে জল কড়ই, ডেম্বুল ইত্যাদি কাঠ ব্যবহার করা হয়। যার দাম পরে দুই হাজার পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা। আর প্লেনসিটের তৈরি নৌকা বার হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এসব নৌকা শক্ত এবং টেকসই হয়ে থাকে। আমির হোসেন জানান, বর্ষার এই মৌসুমে প্রায় সাতশ নৌকা বিক্রি হবে তার কারখানা থেকে। চর এবং নিন্মাঞ্চলের মানুষরাই এর প্রধান ক্রেতা। নৌকা কিনতে আসা আমিনপুরের বাসিন্দা রমজান আলী জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই বিলে পানি আসবে। তখন মাছ ধরার জন্য নৌকা কিনতে আসছি।