Saturday, মে ১৮, ২০২৪
শিরোনাম

বিজ্ঞানী মেরি কুরি : প্রয়াণ দিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

আবদুল্লাহ আল মোহন
১.
বিশ্বে দুই-দুইবার নোবেল পুরস্কার বিজয়ী একমাত্র নারী বিজ্ঞানী মাদাম মেরি কুরি। আবার তিনিই হলেন প্রথম নারী বিজ্ঞানী যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তেজস্ক্রিয়া গবেষণার পথিকৃৎ মাদাম কুরিই বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র নারী বিজ্ঞানী যিনি পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর পরিবারকে নোবেলের ইতিহাসে ‘নোবেল পরিবার’ও বলা হয়ে থাকে। কারণ, তাঁর স্বামী পিয়ের কুরি, মেয়ে আইরিন কুরি এবং মেয়ের স্বামী জুলিও কুরি, সকলেই বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। যা ইতিহাসে বিরল। তাই মাদাম মেরি কুরি প্রথমে একজন বিজ্ঞানী, তারপর একজন নারী, নাকি প্রথমে সফল নারী, মা তারপর বিজ্ঞানী বলা কঠিন। বিজ্ঞানের জগতে তাঁর অবদান বিচার করলে তাঁকে আইনস্টাইনের পাশাপাশি স্থান দিয়ে থাকেন অনেক বিজ্ঞানী। তিনি নি:স্বার্থভাবে সারাটি জীবন ব্যয় করেছেন বিজ্ঞানের গবেষণায়, মানব কল্যাণের জন্যে। যদিও একজন সফল মানুষ হিসেবে, বিশেষ করে পুরোনো পৃথিবীর একজন নারী হিসেবে, সফল মা হিসেবে তাঁর জীবন সংগ্রাম কাহিনী রূপকথাকেও হার মানায়। বিজ্ঞানের এই মহান মানুষটি ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। মহৎপ্রাণ, হৃদয়বান মাদাম মেরি কুরির মহাপ্রয়াণ দিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। উল্লেখ্য যে, তিনি ১৮৬৭ সালের ৭ নভেম্বর পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ার্সে জন্মগ্রহণ করেন।
২.
মাদাম কুরির জন্ম এক পরাধীন দেশে। পোল্যান্ড তখন রাশিয়ার দখলে। ভাষাগত আর অর্থগত অর্থেই শোষিত জাতি তখন পোলিশরা, রাশিয়ার অত্যাচারী জার শাসনের নিষ্পেষণ চলছিল। এমনি এক সময়ে জন্ম নেন মেরি কুরি পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ার্সে। আজীবন তেজষ্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করে এক অজানা রোগে (সম্ভবত লিউকেমিয়া) ১৯৩৪ সালের ৪ঠা জুলাই স্বল্প বয়সে এই মহীয়সী বিজ্ঞান সাধিকার জীবনপ্রদীপ চিরদিনের জন্য নির্বাপিত হয়। ছিলেন পরাধীন দেশের দরিদ্র পরিবারের এক মাতৃহীন মেয়ে, সেখান থেকে নিজের পরিশ্রম আর মেধা দেখিয়ে বড় হয়েছেন। বারবার বিভিন্নভাবে দু:খ-কষ্ট পেয়েছেন। কিন্তু ভেঙ্গে না পড়ে বিজ্ঞানের প্রতি অসীম ভালবাসায় কাজ করে গেছেন অবিরত। তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার জন্য পুরো পৃথিবী তাঁকে মনে রাখবে সবসময়। একদিকে যেমন বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ ছাত্রী ছিলেন, অন্য দিকে ছিলেন ভালবাসায় পরিপূর্ণ স্ত্রী ও মাতা। নিজের সন্তানদেরকে সর্বোচ্চ যত্ন দিয়ে মানুষ করেছেন।জন্মভূমি দেশের কাছ থেকে গ্লানি পেয়েও দেশকে কেবল দিয়ে গেছেন। একসময় জীবনে পেয়েছেন প্রতিষ্ঠা। খ্যাতির শিখরেও উঠেছিলেন। বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীদের সাথে ছিল সুসম্পর্ক। কিন্তু হাজারো প্রলোভনও তাকে নষ্ট হতে দেয়নি। আরেক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন মেরি কুরিকে নিয়ে যথার্থই বলেছেন, “তিনিই সম্ভবত সে সময়ের একমাত্র মানুষ যিনি তার খ্যাতির কারণে দুর্নীতিগ্রস্থ হননি।”
৩.
পরিবারে তাকে মানিয়া নামে ডাকত। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয়েছিল- Marie Sklodowska Curie । পদার্থবিদ্যা আর গণিতের প্রফেসর পিতা ভাদিসভ স্কদ্ভস্কি আর পিয়ানোবাদক, গায়িকা ও একটি নামকরা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মা ব্রনিসভা তাদের পাঁচ সন্তানকে নিয়ে গড়েছিলেন ছোট্ট সংসার। নানা ধরনের রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে তাঁর প্রতিভা স্ফূরণের প্রধান অনুপ্রেরণা হলো তার বিজ্ঞানমনস্ক পরিবার, মূলত বাবা। বিজ্ঞান সম্পর্কে তিনি অনেক বই সংগ্রহ করতেন। প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় মেরির পরিবার বিজ্ঞান ও সাহিত্য নিয়ে আসর বসাত। মেরি ছিলেন সবার ছোট। মেরি কুরি ওয়ার্সার গোপন ভাসমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন এবং ওয়ার্সাতেই তার ব্যবহারিক বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। ১৮৮৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি স্বর্ণপদকসহ উত্তীর্ণ হন।
৪.
মেরির মাত্র দশ বছর বয়সে মৃত্যু শোকের সঙ্গে নিষ্ঠুর পরিচয় ঘটে। রুশদের বৈরী আচরণে তাঁর বাবা মা চাকরি হারান। মা শুরু করেন মেয়েদের বোর্ডিং। কিন্তু আর্থিক অনটনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার কারণে এ সময় তার প্রিয় বড় বোন সোফিয়া টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে মা দুরারোগ্য যক্ষ্মায় আক্রান্ত। মৃত্যুর পর সোফিয়াকে দেখার অনুভূতি সম্পর্কে মেরির জীবনালেখ্য থেকে জানা যায়, সেদিন সাদা পোশাকে বড় বোন যোসিয়া যেন শবাধার আলো করে শুয়ে ছিল, রক্তহীন ফ্যাকাশে মুখ, তবুও ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসির আভাস যেন লেগে ছিল তার। হাত দুটি প্রণামের ভঙ্গিতে বুকের ওপর জড়ো করা, প্রাণহীন দেহ, তবু কত রূপ! শৈশবে মেরির এটাই ছিল প্রথম মৃত্যু দর্শন। এর দুই বৎসর পরে তাঁর মা যক্ষ্মায় মারা যান।
৫.
একসময় পরিবার চরম অর্থ সংকটে পড়ায় তার বড় বোনের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য তিনি ১৮৬৬ সালের ১ জানুয়ারি মাসিক পাঁচশ’ রুবলের বিনিময়ে এক অভিজাত রুশ আইনজীবীর বাড়িতে গভর্ন্যাসের চাকরি নেন। তাদের দু’বোনের মধ্যে শর্ত ছিল একজনের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর অন্যজনের পড়াশোনার খরচ জোগাবে। তাই অনেক মানসিক পীড়নের মধ্যে তাকে তিন বছর চাকরি করতে হয়। এরই মধ্যে তার বড় বোন ব্রোনিয়া ডাক্তারি পাস করে। পূর্ব শর্তানুযায়ী এবার মেরি তার বোনের আর্থিক সহায়তায় বিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথমে অস্ট্রিয়ার শাসনাধীন ‘ক্রাকো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। সেখানে বিজ্ঞান ক্লাসে যোগ দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচিব তাকে অসম্মতি জ্ঞাপন করে বলেন, ‘বিজ্ঞান মেয়েদের জন্য নয়, তাই তিনি যেন রন্ধন শিক্ষা ক্লাসে যোগ দেন।’ ফলে ১৮৯১ সালে ২৪ বছর বয়সে তিনি তার বড় বোন ব্রোনিস্লাভাকে অনুসরণ করে প্যারিসে পড়তে যান। স্বাধীন দেশ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত বিখ্যাত সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানেই তিনি তার পরবর্তী বৈজ্ঞানিক কাজ পরিচালিত করেছিলেন। সেখানে মেয়েদের বিজ্ঞান শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করা হতো। এখানেই তিনি ১৮৯৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার অব সায়েন্সে প্রথম স্থান এবং ১৮৯৪ সালে গণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। এই সময় সন্ধ্যাবেলা তিনি শিক্ষকতা করতেন এবং নিজের খরচ নিজে চালানোর চেষ্টা করতেন। পারতপক্ষে তিনি তাঁর পিতা বা বোনের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিতেন না।
৬.
সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পরিচয় ঘটে এক ফরাসি বিজ্ঞানীর সঙ্গে। নাম পিয়ারে কুরি। যিনি ইতিমধ্যে চুম্বকত্ব ও পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণায় খ্যাতি অর্জন করেছেন। পিয়ারে কুরি তার জীবনকে পরিবর্তিত করার ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রাখেন। তারা বিয়েও করেন। ১৮৯৭ সালে তাঁর প্রথম কন্যা আইরিনের জন্ম হয়। এই সময় তিনি প্যারিসের মূল ধারার শিক্ষা পদ্ধতিরে বাইরের শিক্ষাপদ্ধতি হিসাবে প্রচলিত École normale supérieure -তে শিক্ষকতা শুরু করেন। মেরি এবং তাঁর স্বামী কোনো বিশেষভাবে নির্মিত গবেষণাগারে কাজ করতেন না। তাঁরা চিকিৎসা-বিদ্যালয়ের সাধারণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটা-ছেঁড়ার জন্য ব্যবহৃত কক্ষ ব্যবহার করতেন। এই ঘর জলনিরোধক ব্যবস্থা ছিল না এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাসও চলাচল করতো না। এছাড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে শরীরে কি ধরণের সাংঘাতিক ক্ষতি হতে পারে, সে সম্পর্কে মেরি এবং তাঁর স্বামীর কোনো ধারণা ছিল না। এই কারণে, তাঁরা শরীরে তেজস্ক্রিয় প্রতিরোধকও ব্যবহার করতেন না। তাঁর গবেষণার জন্য স্কুলের কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। তাঁর গবেষণার খরচ যোগান দিত কয়েকটি খনির কোম্পানি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
৭.
মেরি ইউরেনিয়ামের আকরিক পিচব্লেন্ড (pitchblende) এবং ক্যালোকোলাইট (chalcolite) নিয়ে গবেষণা করতেন। তিনি গবেষণার সময় লক্ষ্য করেছিলেন, পিচব্লেন্ড ইউরেনিয়ামের চেয়ে চারগুণ বেশি এবং ক্যালোকোলাইট-এর চেয়ে দুই গুণ তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে থাকে। এই ফলাফল থেকে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো নতুন একটি তথ্য উপস্থাপন করেন। এই নতুন তথ্যে তিনি বলেন, পিচব্লেন্ড এবং ক্যালোকোলাইট-এর ভিতরে এমন নতুন কোনো উপাদান আছে, যা ইউরেনিয়ামের চেয়ে বেশি তেজস্ক্রিয়। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে তেজস্ক্রিয়তা প্রদানকারী পদার্থের তালিকা তৈরির চেষ্টা করেন। এই গবেষণায় তিনি থোরিয়ামের তেজোস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে, তাঁর কাজের সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হন তাঁর স্বামী পিয়ের কুরি। এরপর পিচব্লেন্ড নিয়ে কুরি দম্পতি গবেষণা শুরু করেন। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে কুরি দম্পতি একটি নতুন মৌলিক পদার্থের কথা বলেন। এবং এর নাম দেন পোলোনিয়াম। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় মৌলিক পদার্থ আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। এই নতুন উপকরণটির নাম দেন রেডিয়াম। যা ইউরেনিয়াম হতে দশ লাখ গুণ বেশি শক্তিশালী। এই রেডিয়ামের ব্যবহার অপরিসীম। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আতঙ্ক আণবিক বোমা। আর আণবিক বোমা তৈরির অন্যতম উপাদান পোলোনিয়াম। একটি পদার্থে এই পোলোনিয়ামের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছিলেন কুরি দম্পতি। এই দম্পতি পদার্থ থেকে বিশুদ্ধ পোলানিয়াম ও রেডিয়ামের অস্তিত্ব আবিষ্কার এবং পৃথক করার কাজে সফলতা লাভ করেন এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানীর মর্যাদা পান। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে মেরি École normale supérieure -এর ফ্যাকাল্টি সদস্য হন। এই সময় পিয়ের সোরবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য হন। এরপর উভয়ই তাঁদের গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এক টন পিচব্লেন্ড থেকে, এক গ্রামের ১/১০ ভাগ ওজনের রেডিয়াম ক্লোরাইড উদ্ধার করেন। এই বৎসরে তাঁর পিতার মৃত্যু হয় এবং এই সময়ে তিনি পোল্যান্ডে পিতার শেষকৃত্যে যোগাদান করেন। তাদের কাজের অবদানস্বরূপ ১৯০৩ সালে লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি কুরি দম্পতিকে ডেভি পদক প্রদান করে। এ বছরই পদার্থবিজ্ঞানে হ্যানরি বেকেরেলের সঙ্গে তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, হেনরি বেক্য়রেল-এর তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। এর কিছুদিন পর, স্বামীসহ লণ্ডনে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপর বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেরি এই সভায় বক্তৃতা দিতে পারেন নি, নারী হওয়ার কারণে।
৮.
১৯০৪ সালে তাঁর দ্বিতীয় সন্তান ইভা কুরির জন্ম হয়। ১৯০৬ সালের ১৯ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় পিয়ের কুরি মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে তিনি ভেঙে পড়েন। পিয়েরের মৃত্যুর কিছুদিন পর, ১৩ মে, সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিয়ের-এর জন্য নির্ধারিত অধ্যাপকের চেয়ার মেরিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেরি এই চেয়ার গ্রহণ করেন এবং তাঁর এবং তাঁর স্বপ্নের গবেষণাগার তৈরির উদ্যোগ নেন। কিন্তু তিনি এই গবেষণাগার তৈরির কাজ শেষ করতে পারেন নি। এই সময় প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাস্তুর ইনস্টিটিউট মেরির জন্য তেজস্ক্রিয়তার গবেষণার জন্য রেডিয়াম ইন্সটিটিউট তৈরি করে। মেরিকে এই ইন্সটিটউটের প্রধান করা হয়। ১৯১০ সালে তিনি বিশুদ্ধ রেডিয়াম জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন। তিনি রেডিয়ামকে বিশুদ্ধ অবস্থায় আলাদা করতে পারার মাধ্যমে পুনরায় তার যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম হন। এই কৃতিত্বের জন্য ১৯১১ সালে রসায়ন বিজ্ঞানে তিনি একা নোবেল পুরস্কার পান। এই পুরস্কার লাভের পর তিনি কিডনির অসুখে হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৯১২ সালের পর থেকে তিনি, জনসমক্ষে আসা কমিয়ে দেন। এই সময় তাঁর পদার্থবিজ্ঞানী বন্ধু, Hertha Ayrton-এর সাথে সময় কাটান। প্রায় ১৪ মাস পরে তিনি তাঁর গবেষণাগারে যোগদান করেন। এই সময় ‘ওয়ারস সায়েন্টিফিক সমিতি’ তাঁদের নতুন গবেষণাগারে ডিরেক্টর পদ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু রেডিয়াম ইন্সটিটিউট গবেষণাগার উন্নয়নের জন্য এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। তবে ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পোল্যান্ড ভ্রমণে আসেন। ১৯১৪ সালে রেডিয়াম ইন্সটিটিউটের গবেষণাগার তৈরি শেষ হয়।
৯.
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য তাঁর ডাক পড়ে। তিনি নতুন করে যুদ্ধের উপযোগী এক্সরে যন্ত্রের উন্নয়ন করেন। একই সাথে চলমান রেডিওগ্রাফি পদ্ধতিরও উন্নয়ন করেন। অচিরেই তিনি রেডক্রস রেডিওলোজি পরিসেবা’র ডিরেক্টর হন। ১৯১৪ সালের শেষের দিকে তিনি ফ্রান্সে প্রথম রেডিওলোজি কেন্দ্র স্থাপন করেন। এই সময় তাঁকে সাহায্য করেছেন তাঁর ১৭ বৎসরের কন্য আইরিন কুরি। যুদ্ধের সময় ফরাসি সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য, তিনি তাঁর নোবেল প্রাইজ মেডেল বিক্রয়ের উদ্যোগ করেন। কিন্তু ফরাসি জাতীয় ব্যাংক এই বিক্রয়কে অনুমোদন করে নাই। এই কারণে তিনি নোবেল পুরস্কারের টাকা দিয়ে ওয়ার বন্ড কেনেন। যুদ্ধের পর Radiology in War নামক বই রচনা করেন। বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর নামে একটি বৃত্তি চালু করে। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে রেডিয়াম গবেষণার জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওয়ারেন জি হার্ডিং তাঁকে হোয়াইট হাউসে সম্বধর্না দেন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি French Academy of Medicine-এর ফেলো নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ব্রাজিল, বেলজিয়াম, স্পেন, এবং চেকোশ্লোভাকিয়া ভ্রমণ করেন। এই বৎসর গঠিত হয় International Commission for Intellectual Cooperation of the League of Nations। এই সংগঠনের তিনি সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পিয়ের-এর জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থের নাম ছিল-Pierre Curie। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ারস রেডিয়াম ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার সময় তিনি পোল্যান্ডে যান।
১০.
দীর্ঘদিন তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করার কারণে, তাঁর দেহের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল। এই কারণে তিনি নানারকম শারীরীক অসুবিধায় ভুগতে থাকেন। সে সময়ে তেজস্ক্রিয়তাজনীত চিকিৎসার তেমন সুব্যবস্থাও ছিল না। জীবনের শেষ দিকে তাঁকে শারীরীক যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে কাটাতে হয়েছ। অনন্য প্রতিভার অধিকারী এই বিজ্ঞানী ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই অ্যাপ্লাস্টিক অ্যামোনিয়া নামক হাড় ও রক্তের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার এই জটিল রোগ এবং মৃত্যুর কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় তারই আবিষ্কার রেডিয়াম বা রেডিয়েশন নিয়ে কাজ করাকে। উল্লেখ্য, তখন রেডিয়েশনের এই ক্ষতিকর দিক এবং নিরাপত্তার বিষয়টি সবার জানা ছিল না। মেরি কুরি যেন নিজের জীবন দিয়ে তারই আবিষ্কারের ভয়াবহতা সবাইকে জানিয়ে গেলেন। আজ তেজস্ক্রিয়তা আমাদের নিয়ে গেছে আধুনিক, অতি আধুনিক জগতে। তার জন্য আমাদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করতে হয় তার নাম, যিনি ছিলেন এর পথিকৃৎ।
১১.
কি অধ্যবসায়ই না ছিল তার। করতে পারতেন অক্লান্ত পরিশ্রম। সেই মেরি কুরির একটি বিশেষ অর্জন হলো তিনিই ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি অব প্যারিসের প্রথম নারী প্রফেসর ছিলেন। এছাড়া নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দুটি ভিন্ন বিষয়ে নোবেল পাওয়ার একমাত্র কৃতিত্বও তার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আহত সৈনিকদের যিনি দিয়েছেন একাগ্র সেবা, ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানীদের দিয়েছেন উপদেশ ও পরামর্শ। সর্বোপরি নিজের স্বাস্থ্যের দিকে না তাকিয়ে যিনি ঢেলে দিয়েছেন তার সবটুকু সময়। মেরি কুরি উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছিলেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: Nobel Prize পদার্থবিজ্ঞান (১৯০৩), পিয়ের কুরি হেনরি বেকুয়েল-সহ, Davy Medal (১৯০৩), পিয়ের কুরি –সহ, Matteucci Medal (১৯০৪), পিয়ের কুরি –সহ, Elliott Cresson Medal (১৯০৯), Nobel Prize রসায়নবিজ্ঞান, (১৯১১), Franklin Medal of the American Philosophical Society (১৯২১)। তাঁর এবং তাঁর স্বামীর সম্মানার্থে তেজস্ক্রিয়তার একক কুরি রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানে এই এককটি আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতির অন্তর্গত নয়। এর প্রতীক Ci।
1 Ci = 3.7 × 1010 decays per second.
১২.
মেরি ও পিয়ারে কুরির অমর প্রেম কাহিনির কথা না বললে তাঁদের জীবনী অসমাপ্ত থেকেই যায়। আমরা জানি, ইতিহাসের পাতায় আলাদা স্থান করে নেওয়া প্রেমের ঘটনাগুলোর অধিকাংশই বিয়োগান্তক। সেইসব ঘটনায় প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের চেয়ে বিরহটাই প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। কিন্তু ব্যতিক্রম বিরল নয়। কেউ কেউ প্রেম করেই ক্ষান্ত হননি, সেই প্রেমকে পরিণতি দিয়ে সংসার পেতেছেন। শেষ জীবন পর্যন্ত দুজন থেকেছেন পাশাপাশি। কী সংসার কী পেশা দুজন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছেন। এমনই এক জুটি মেরি এবং পিয়ারে কুরি। এ জুটির প্রেম কাহিনীতে বাড়াবাড়ি রকমের কোনো উপাত্ত ছিল না। ছিল না কোনো লোক দেখানো কাজকর্ম, ছিল না আবেগের ঘনঘটা। সাধারণ আট-দশটা প্রেম কাহিনীর মতোই সাদা-মাটা ছিল পিয়ারে এবং মেরির প্রেমকাহিনী। কিন্তু অন্যসব সাধারণ প্রেমে যে জিনিসটার অনুপস্থিতি, সেটাই তীব্রভাবে উপস্থিত ছিল তাদের প্রেমে। তাদের মধ্যে ছিল একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস। দুজন দুজনকে যেমন প্রচণ্ড পরিমাণে ভালোবাসতেন, তেমনি এরা একজন ছিলেন আরেকজনের অনুপ্রেরণা! দুজনই চরম মেধাবী বিজ্ঞানী ছিলেন। ইতিহাসে দুজনেই সফল হয়েছেন এমন মেধাবী-সফল প্রেমিক জুটি খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর এখানেই নিজেদের আলাদা করে রেখেছেন পিয়েরি এবং মেরি কুরি দম্পতি। মানবতার কল্যাণে আর কাজের মধ্যেই এগিয়েছে তাদের প্রেম।
তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণায় পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানীদের শীর্ষমণি হিসেবে সমাদৃত মেরি কুরি। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে ডিগ্রি লাভ করেন এবং অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লোপম্যানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যাব্রেটরিতে কাজ করার সুযোগ পান। এরপর তিনি প্যারিসের সোসাইটি ফর দ্য এনকারেজমেন্ট অব ন্যাশনাল ইন্ডাস্ট্রি পরিচালিত একটি গবেষণামূলক কাজ শুরু করেন। এই কাজটি ছিল বিভিন্ন ইস্পাতের চৌম্বক গুণাগুণ পরীক্ষা করা। এই গবেষণার সূত্রে তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে পিয়ের কুরির। উভয়ই ছিলেন প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অনুরাগী। এই সময় পিয়েরি কুরি স্কুল অব ফিজিক্স অ্যান্ড কেমিস্ট্রির প্রশিক্ষক ছিলেন। মেরি গবেষণার জন্য একটি বড় গবেষণাগার খুঁজছিলেন। পিয়েরি মেরির জন্য কিছু করতে চাইলেন। তখন তিনি বড় কোনো গবেষণাগারের ব্যবস্থা করতে না পারলেও, একটি গবেষণাগারে কাজ করার সুযোগ করে দিলেন। কাজের ভিতর দিয়ে উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তীব্রতর হয়ে উঠলে, পিয়েরি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেরি দেশে ফিরে যাবেন এবং দেশের জন্য কিছু করবেন বলে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর পিয়েরি তার সঙ্গে পোল্যান্ডে যেতে চাইলেন। এরপরও বিয়েতে রাজি হলেন না মেরি। তবু পিয়ারের মনে মেরির জন্য ভালোবাসা অটুট থাকল। এর মধ্যে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মের ছুটিতে মেরি ওয়ারসতে ক্রাকোউ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু শুধু মেয়ে হওয়ার কারণে তিনি সেখানে সুযোগ পাননি। এই সময় প্যারিস থেকে পিয়ারে এক চিঠিতে তাকে প্যারিসে ফিরে আসার আবেদন করেন এবং পিএইচডি করার অনুরোধ করেন। এরপর তিনি প্যারিসে ফিরে আসেন। এই সময় পিয়ারে চৌম্বকত্ব নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখেন এবং ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। মেরি এই বছরেই পোল্যান্ড থেকে ফিরে আসেন এবং ২৬ জুলাই সিভিল ইউনিয়ন কোর্টে উভয়ের বিবাহ হয়। ১৮৯৮ সালে এই বৈজ্ঞানিক যুগল আবিষ্কার করেন পলোনিয়াম আর রেডিয়াম। পদার্থ বিদ্যায় এবং রেডিও-আক্টইভিটিতে অবদানের জন্য এই দম্পতি ১৯০৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯০৪ সালে পিয়েরি কুরি মারা যাওয়ার পর মেরি নিজের স্বামীর দেশেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং কুরির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন। অবশেষে ১৯১১ সালে মেরি কুরি পৃথিবীর একমাত্র নারী যিনি দ্বিতীয়বারের মতো এবং ভিন্ন বিষয়ে নোবেল অর্জন করেন। এবার তার বিষয় ছিল রসায়ন বা কেমিস্ট্রি! ১৯৩৪ সালে লিওকিমিয়ায় মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্বামী পিয়েরি কুরির বিভিন্ন অসমাপ্ত গবেষণা বা রিসার্চ তিনি চালিয়ে যান, সফলও হন। অন্যদিকে বিখ্যাত পদার্থবিদ পিয়ারে কুরি সংসারের বাইরেও স্ত্রী মেরির সঙ্গে অনেক বিষয়ে ভাগাভাগি করেছেন। এই যেমন ১৯০৩ সালে তাদের একসঙ্গে নোবেল পাওয়া। পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী মেরি শুধু যুবতী এবং সুন্দরীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন পিয়েরির মতো বুদ্ধিমত্তার অধিকারিণী। উল্লেখ্য, অনেকেই মেরিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে পিয়ারে তার মনই জয় করেননি, বিয়েও করেছেন। দুজনের সফল সংসার এখন কেবলই সাফল্যের অনুকরণীয় ইতিহাস।
১৩.
মেরিকে লেখা পিয়ারে কুরির লেখা একটি প্রেমপত্র, চিঠি পাঠ করা যেতেই পারে। মেরিকে লিখছেন, ‘তোমাকে পাওয়ার চেয়ে কোনো কিছুই আমাকে অধিক আনন্দ দেয়নি। দুই মাস তোমার কোনো খোঁজ না পাওয়া ছিল আমার জন্য বেদনাদায়ক। বলতে কি তোমার চিঠিটা আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। আমি আশা করি তুমি ভালো থাকবে এবং আগামী অক্টোবরে ফিরে আসবে। ওই সময় আমি কোথাও যাব না, দেশেই থাকব। আমার সারাটি দিন কাটবে খোলা জানালার পাশে অথবা বাগানে দাঁড়িয়ে। আমরা দুজন দুজনকে কথা দিয়েছিলাম, দিয়েছিলাম না অন্তত ভালো বন্ধু হওয়ার জন্য। তুমি তোমার মনকে পরিবর্তন নাও করতে পার। তবে সব প্রতিশ্র“তি বাধা নয়, কিছু বিষয় ইচ্ছামতো হয় না। আমি ভালোভাবে বিশ্বাস করি কিছু বিষয় যেমন আমাদের একসঙ্গে বাস করা, আমাদের স্বপ্ন, তোমার দেশপ্রম, আমাদের মানবপ্রেম এবং বিজ্ঞান প্রেম। সব কিছুর শেষ হচ্ছে আমি ন্যায়কে বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, সমাজ পরিবর্তন করার শক্তি আমাদের নেই। যদি আমরা একসঙ্গে না থাকতাম তাহলে নিশ্চিত হতাম না কিছু অপরিহার্য পরিবর্তন দমন ভালোর চেয়ে খারাপ কাজ। বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা অন্য কিছু করার প্রত্যাশা করি। যেখানে ভূমি হচ্ছে সৈনিক, আর আমরা জ্ঞান অর্জনের স্বার্থে কিছু আবিষ্কার করতে পারি,তা যত ছোটই হোক না কেন। এটা নিশ্চিত যে আমরা ভালো বন্ধু হতে পারি। তুমি যদি ফ্রান্সে থাক তাহলে এটি হবে প্লেটোনিক ভালোবাসা। আর এখানে দুটি প্রাণী কখনই একে অন্যকে দেখতে পাই না। আমার সঙ্গে থাকার চেয়ে ভালো কিছু হবে তোমার। আমি জানি এই প্রশ্ন তোমাকে রাগাচ্ছে। হয়তোবা এর জন্য পরে কথা বলতে চাইবে না। ভাববে ধীরে ধীরে আমি তোমাকে অশ্রদ্ধা করব। ফ্রিবারগে আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। তুমি সেখানে আছ আমার ভুল করা দেখার জন্য। তবে এক দিন, অবশ্যই এক দিন তুমি আমাদের বন্ধুত্ব অনুভব করবে কভালস্কিস।’

(তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা, দেশ, জিরো টু ইনফিনিটি, দৈনিক সমকাল, দৈনিক ডেসটিনি, দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকা, ইন্টারনেট)

আবদুল্লাহ আল মোহন
৭ নভেম্বর, ২০১৫ / ৪ জুলাই, ২০১৬ / ৭ নভেম্বর, ২০১৬ / ৪ জুলাই, ২০১৭/ ৪ জুলাই, ২০১৮

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর