Saturday, মে ১৮, ২০২৪
শিরোনাম

রাষ্ট্রচিন্তা : কোথায় চাই মেরামত

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

রেজাউল করিম শেখ

পৃথিবীতে কেউ অপরাধী হয়ে জন্ম নেয় না- এ কথা প্রায় সকলেই জানি, স্বীকার করি। কিন্তু বাস্তবিক জীবনে মেনে নিতে পারি না। পারি না বলে, রাস্তায় জন্ম নেওয়া, বেড়ে ওঠা শিশুকে ভালোবাসতে, তার প্রতিষ্ঠায় কিংবা সমাজ জীবনে অন্তর্ভুক্ত হওয়াকে সহজে মেনে নিতে পারি না। সহজ হবে কেন, কোনোভাবেই নিতে পারি না। যে শিশুটি বিদ্যালয়ে বা গুরু গৃহে মহোত্তম হতে পারে তাকে যখন বন্দুক হাতে দেখি, তাকে কেবল ঘৃণাই করি। তার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করি। এ নিয়ে দোষের কিছু আপাতত দেখি না। যে ব্যবস্থা , যে মডেল দীর্ঘদিন- দীর্ঘ পরিশ্রমে গড়ে তুলেছি আমরা , সেই মডেল এর উৎপাদন তো এমনই হবে। এই প্রশ্ন আমরা খুব একটা করতে পারি না- কেন সে মানুষের চোখ, মুখ, নাক, নাভি, মুণ্ডু, ধর, পা নিয়েও, সমাজ ও পরিবার, পরিবার ও রাষ্ট্র তার থেকে উপকৃত হচ্ছে না? কেন প্রতিনিয়ত তার সর্বগ্রাসী কর্মকাণ্ডে ধ্বংসের লীলাযজ্ঞ হয়? সকলে এ প্রশ্ন করতে পারবে না, কারণ সাধারণ বলতে কোনো প্রশ্ন নেই যাদের জীবনে তারা তো কেবল সাময়িক ভোগের লালসায় লিপ্ত থাকে। এদের উঠোন পেরোলেই প্রবাস জীবন। এই পথশিশু, এই বন্দুকবাজীর পেছনে থাকে অনেক মানুষ, অনেক মানুষের ভোগের-লালসার নির্লিপ্ত জল। এইকথা বললে, সকলে বুঝি- কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই ওই কথিত শ্রেণি। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এখন। কেননা, সকল সাধু ও অসাধু কাজের সূতিকাগার অবশ্যই প্রথমে পরিবার। পরিবার যেমন সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রথম একক, তেমন ওই সাধু-অসাধু কাজেরও একক। সন্তানের ছোট ছোট অপরাধ কিংবা বিচ্যূতিকে হেলায় ফেলে, সঠিক নৈতিকতার ধারণা না দিয়ে, ভালোবাসা ও স্নেহের পরশ না দিয়ে কর্কশ-কঠিন ভাষায় মানসিক বিকার ঘটিয়ে বৃহত্তর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শত্রু তৈরী করে এই পরিবার তথা পরিবারের আবাল্য মূর্খ নর-নারী। মূলত অপরাধের বিচার করলে কাঠগড়ায় এদের দাঁড় করাতে হবে। কেন তারা সন্তানের সঠিক শিক্ষা, সঠিক ধারণা দিতে পারেনি। একথা বলে থেমে গেলে কথারও বিচ্যূতি থেকে যায়- কারণ সকল ব্যক্তি ও পরিবার এই জ্ঞান দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি, এইতো। হ্যাঁ- কথাটা খাটে বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। পরিপ্রেক্ষিত মানে হলো, সকলে তো আর সাধু নয় বা এই নষ্ট মডেল ভাঙতে পারবে না- কারণ তারা এটা বোঝেও না। এখন এটা ভাঙতে বা সংস্কার বা নতুন করে গড়তে পারবে সমাজের চিন্তায় ও কর্মে অগ্রসরজন। এদের কাজটা মোটেও সহজ নয়, মোটেও নিষ্কণ্টক নয়। যাদের জন্য এরা কাজ করবে তারাই এদের প্রতিবন্ধক, তারাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে সামনে। তবুও ত্যাগের বা ধৈর্য্যের দৃষ্টান্ত রেখে এগিয়ে যেতে হবে সামনে।

লেখক : রেজাউল করিম শেখ, কবি ও সাংবাদিক, সভাপতি, নপম।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর