Sunday, মে ১৯, ২০২৪
শিরোনাম

ওরা মানে না মানা…

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

বার্তা সংস্থা পিপ, পাবনা : সারা বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত। সবাই নিজেরা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখছে। চলছে লকডাউন শাটডাউন।
বাংলাদেশ সরকার এ ভাইরাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে সকল প্রকার যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। সর্বোপরি ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
তবে সামাজিক দূরত্ব ও নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না পাবনা জেলার ৯ উপজেলার কৃষকরা।
এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখন চলছে পেঁয়াজ, গম ঘরে তোলার মৌসুম। মাঠে পরিচর্যার অপেক্ষায় রয়েছে বোরো ধানের ক্ষেত। আকাশে মেঘের ঘনঘটা প্রতিদিনই কৃষকের মনে কম্পন সৃষ্টি করছে। এই বুঝি বৃষ্টি এলো। করোনার সকল ভয়কে দূর করে কৃষক এখন ব্যস্ত সময় পার করছে পেঁয়াজ, গম ও ধানের জমিতে।
সাঁথিয়ার ঐতিহ্যবাহী ঘুঘুদহ বিলপারের বিষ্ণুপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পরিবারের সদস্য ও শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে নিজেদের আবাদকৃত জমি থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে।
কোন কোন জমিতে চার থেকে সাত জন শ্রমিক এক সাথে কাজ করছে। তাদের কারও মুখে মাস্ক নেই। সবান ছাড়াই হাত ধুয়ে সকাল ও দুপুরের খাবার মাঠে বসেই খাচ্ছে তারা। মাঠের প্রায় প্রতিটি জমিতে কৃষক শ্রমিক একসঙ্গে ফসল সংগ্রহ করছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুন, গম ও ধানের জমিতেও শ্রমিকরা দল বেঁধে কাজ করছে।
কৃষকদের বাড়িতে গিয়েও দেখা গেছে দল বেঁধে এক সাথে বসে ৫ থেকে ১০ জন মহিলা পেঁয়াজ পরিস্কার করছে। উপজেলার সকল মাঠ ও পেঁয়াজ চাষির বাড়ির চিত্র একই।
করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদের ঘরে রাখতে যে শিক্ষার্থীদেরকে সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে তাদেরকেও পাওয়া যাচ্ছে মাঠে।
বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক (৬১) জানান, পেঁয়াজ সংগ্রহের সময় হয়েছে। বর্তমানে বাজার ভালো। বৃষ্টি হলে এ পেঁয়াজ ঘরে রাখা যাবে না, দামও কম হবে। তাই করোনার ভয়ে বসে থাকলে তো আমাদের চলবে না। সারা বছরের পরিবারের খরচ এ পেঁয়াজ থেকে চলে। ফসল ঘরে তোলার পরে করোনা নিয়ে ভাবতে হবে।
একই মাঠে স্বপরিবারে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছেন সাহেব আলী নামক এক কৃষক। তিনি জানান, করোনার জন্য ঘরে বসে থাকলে ফসল তো ঘরে উঠবে না। বৃষ্টি হলে সব শেষ হয়ে যাবে।
চলতি রবি মৌসুমে পাবনা জেলায় ৪৯ হাজার ৫শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে।
সব চেয়ে বেশী পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলায়। এর মধ্যে সাঁথিয়া উপজেলায় ১৬ হাজার ৫শ’ ৭০ হেক্টর ও সুজানগরে ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অনেক উপজেলায় এ লক্ষামাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ রোপন হয়। চলতি মৌসুমে সাঁথিয়ায় ২০ হাজার ৬শত মেট্রিক টন গম উৎপাদন লক্ষামাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।


জেলার সাঁথিয়াসহ সব উপজেলাতেই কম বেশি রবি শস্যর উৎপাদন হয়। আর এ সময়ে কৃষকেরা ব্যস্ত থাকে ফসল ঘরে তুলতে।
কৃষকের ব্যস্ত সময়ে দেশে করোনার মত ভয়াবহ ভাইরাস দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা ও সংক্রামণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছে না। এতে করে সাঁথিয়ার কৃষক ও তার পরিবারের সদস্যরা করোনা ভাইরাসের ঝুকিতে রয়েছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সঞ্জীব গোস্বামী জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে কৃষকদের করোনা বিষয়ে সচেতন করছি।
ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারি কৃষি অফিসাররা কৃষকদের সাথে কথা বলে করোনা বিষয়ে ধারণা দিচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি আমি নিজেও মনিটরিং করছি।

শেয়ার করতে এখানে চাপ দিন

সর্বশেষ খবর